একুশ দিন ধরে টানা অনশনে জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে অর্পিতা

প্রকাশ ঘোষ নামে এক অনশনকারী জানান, অনেকে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে অনশন ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪৬
Share:

অনশনে অসুস্থকে নিয়ে হাসপাতালের পথে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

গত একুশ দিন ধরে যিনি এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অনশনকারীদের মনের জোর বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন, সেই অর্পিতা দাস নিজেই টানা অনশন করায় গুরুতর অসুস্থ পড়লেন। বুধবার বিকেলে অর্পিতা অনশন-মঞ্চে জ্ঞান হারান। অ্যাম্বুল্যান্সে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।

Advertisement

এ দিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শম্পা শূর এবং মামণি বসাক নামে অন্য দুই অনশনকারীকেও। স্কুলশিক্ষকের পদে নিয়োগের দাবিতে মেয়ো রোডে প্রেস ক্লাবের সামনে অন্তত ৪০০ জন অনশন করছেন। অসুস্থ হয়ে পড়েন ৫০ জনেরও বেশি প্রার্থী। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের চিকিৎসকদের একটি দল তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। সেই দলের এক চিকিৎসক জানান, টানা অনশনে শরীরে গ্লুকোজ কমে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই।

প্রকাশ ঘোষ নামে এক অনশনকারী জানান, অনেকে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে অনশন ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁর জায়গায় অন্য এক জন অনশনে বসছেন। ‘‘টানা অনশনে আমাদের জেদ বেড়ে গিয়েছে। আমরা স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষায় পাশ করেছি। ইন্টারভিউ, নথি যাচাইয়েও উত্তীর্ণ হয়েছি। বাকি শুধু চাকরি পাওয়া। শিক্ষকের অসংখ্য পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও আমাদের বছরের পর বছর বসে থাকতে হবে কেন,’’ প্রশ্ন প্রকাশবাবুর। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বচ্ছতার সঙ্গেই যোগ্যদের চাকরি দেওয়া হবে। অনশন করে চাকরি পাওয়া যায় না।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ দিন বিকেলে অনশন-মঞ্চে গণকনভেশনের আয়োজন করা হয়। অনশনকারীরা এই মঞ্চকে অরাজনৈতিক বললেও মিছিল করে স্লোগান তুলে সেখানে পৌঁছন সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। আসেন দক্ষিণ কলকাতার বাম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ও। ‘‘এই সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানাচ্ছি। নইলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। এসএসসি পরীক্ষা নিয়মিত হলে এই সমস্যা হত না,’’ বলেন নন্দিনী।

অরাজনৈতিক মঞ্চে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা কেন? তানিয়া শেঠ নামে এক অনশনকারী বলেন, ‘‘আমাদের মঞ্চ অরাজনৈতিকই। তবে সব দলেরই লোকজন আমাদের সমর্থন করতে আসছেন। কবি, গায়ক, সমাজকর্মী, নাট্যকার সবাই আসছেন। সবাই বক্তব্য জানাচ্ছেন। আমরা কাউকে আসতেই বারণ করিনি।’’

তানিয়া জানান, মঙ্গলবার তাঁদের এক দল প্রতিনিধি বিকাশ ভবনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। দাবিদাওয়া নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনা হয়। প্রতিনিধিরা মন্ত্রীকে বলেছেন, মুখের কথায় তাঁরা বিশ্বাস করছেন না। শূন্য পদ ‘আপডেট’ বা হালতামামি করে তাঁদের সকলকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকতে হবে। একমাত্র তা হলেই তাঁরা অনশন তুলবেন। তানিয়া বলেন, ‘‘প্রায় সব জেলাতেই শিক্ষকপদ শূন্য আছে। সেই সব খালি পদ আপডেট করলেই সকলের চাকরি হয়ে যায়।’’

এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, ‘‘আমাদের কাছে শূন্য পদের যে-হিসেব আছে, তার ভিত্তিতে কাউন্সেলিং হচ্ছে। সেই অনুযায়ী নিয়োগ করছি। শূন্য পদ আপডেট করার ক্ষমতা এসএসসি-র নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement