শ্রীনু নায়ডু হত্যা মামলার সরকারি আইনজীবীকে ফোনে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মহাদেব মান্না নামে ওই ব্যক্তিকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ধৃতকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।
এই নিয়ে এই ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল তিন। এর আগেই বর্ধমানের কাটোয়া থেকে দুই কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃত ইন্দ্রজিৎ বেরা এবং শেখ হাদিউজ্জামান কাটোয়ার এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়া। কলেজ হস্টেল থেকেই তাদের ধরা হয়। মোবাইল ফোন এবং সিমকার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মহাদেবের নাম জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
মেদিনীপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিবের স্ত্রীর মোবাইলে পরপর দু’দিন হুমকি ফোন আসায় শোরগোল পড়েছিল। অভিযোগ, ফোনে বল হয়েছে, ‘শ্রীনু খুনে ধৃতদের বিরুদ্ধে সওয়াল করলে ফল ভাল হবে না।’ হুমকি ফোনের কথা জানিয়ে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই সরকারি আইনজীবী। গোটা ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকেও জানান তিনি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই ঘটনার কিনারা হয়ে যাবে।”
গত ১১ জানুয়ারি খড়্গপুরে তৃণমূল কার্যালয়ের মধ্যে শ্রীনু নায়ডু খুনের পরে তৃণমূল নেতৃত্ব শহরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষের দিকে আঙুল তোলেন। তারপর শহর ঘুরে গিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু। প্রশাসন সভার অনুমতি না দেওয়ায় হেঁটে-সাইকেলে জনসংযোগ সেরেছেন।
সেই কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে এ বার মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। শুক্রবার খড়্গপুরের খরিদায় শহর তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির উপস্থিতিতে এক বৈঠক হয়। ছিলেন দলের পুর-কাউন্সিলররা। সেখানে ঠিক হয়েছে আগামী ২৪ জানুয়ারি মিছিল করে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বিভিন্ন মন্তব্যের জবাব দেওয়া হবে। অজিতবাবু বলেন, “দিলীপ ঘোষ পাড়ার দাদাদের মতো কথা বলছেন। শহর ঘুরে মানুষকে ভুল বার্তা দিচ্ছেন। শহরবাসী আতঙ্কিত।” খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারেরও বক্তব্য, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিধায়ক হয়ে শহরে মাসে একবার আসেন আর উস্কানিমূলক কথা বলে চলে যান। অথচ উন্নয়নে নজর নেই। আমরা লাগাতার প্রতিবাদ করব।”
যদিও বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরের বিধায়ক হিসাবে দিলীপ ঘোষ এ বার এখানেই এসে থাকবেন। উনি মানুষের পাশে থাকতেই শহরে আসছেন। আর তৃণমূল আতঙ্কিত হচ্ছে।”