গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দলের সর্বোচ্চ নেত্রী বৃহস্পতিবার আক্রমণ করেছিলেন অমিত শাহকে। শুক্রবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন ‘সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড’। কাকে বলে ‘সুশাসন’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে শিখে নিন নরেন্দ্র মোদী— টুইট করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রত্যেক পরিবারকে সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় নিয়ে আসার যে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা করেছেন, তার প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্দেশে এই কটাক্ষ অভিষেকের।
অভিষেক শুক্রবার টুইটারে লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে নরেন্দ্র মোদীজি শিখে নেওয়া শুরু করতে পারেন, প্রশাসন কী ভাবে চালাতে হয়। এটাই সবচেয়ে ভাল সময়’। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে রাজ্যের সব নাগরিককে সরকারি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার কথা বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছিলেন মমতা। অন্য কোনও রাজ্যের সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারও এই রকম সিদ্ধান্ত এখনও গ্রহণ করতে পারেনি। মমতার সরকারের এই সিদ্ধান্তকেই হাতিয়ার করেছেন অভিষেক। স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় সবাইকে নিয়ে আসার এই সিদ্ধান্ত দেখে মোদীর শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে তিনি লিখেছেন।
স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারেরও রয়েছে। সেটির নাম ‘আয়ুষ্মান ভারত’। সেই প্রকল্পকে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েনও বার বার সামনে এসেছে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প যে হেতু আগেই বাংলায় চালু করেছিলেন মমতা, সে হেতু কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে তিনি আর বাংলাকে শামিল করেননি। কেন্দ্রের ওই প্রকল্পে রাজ্য অংশ নিলে ৬০ শতাংশ খরচ দেবে কেন্দ্র। বাকি ৪০ শতাংশ দিতে হবে রাজ্যকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাতে রাজি হননি। কেন্দ্রের প্রকল্পে টাকা খরচ রাজ্য করবে না, বরং রাজ্য নিজের প্রকল্প চালাবে, ১০০ শতাংশ খরচই নিজে করবে— মুখ্যমন্ত্রী এ কথা অনেক বারই জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা থেকে শুরু করে বিজেপির অন্য নেতারা— সবাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বার বার আক্রমণ করেছেন আয়ুষ্মান প্রসঙ্গে। ‘সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে’ বাংলার মানুষকে মমতা কেন্দ্রের প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছেন বলে তাঁরা তোপ দেগেছেন। বৃহস্পতিবার মমতা ফের সে সব তোপের পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প যে সবাইকে বিমার আওতায় আনবে, আয়ুষ্মানে যে তা হয় না, সে কথা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার অভিষেকও সেই সব কথাই আরও বিশদে লিখেছেন টুইটে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ২০১৬ সালে চালু হয়েছিল বাংলায়, কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত চালু হয়েছিল ২০১৮ সালে। মনে করিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় সবাই আসবেন, কেন্দ্রের প্রকল্পে তা হবে না— এ কথাও অভিষেক লিখেছেন। দুই প্রকল্প সম্পর্কে তুলে ধরা সেই তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রকে খোঁচা দিয়ে অভিষেক লিখেছেন, ‘এই তুলনা এটাই প্রমাণ করে যে, বাংলা যা আজ ভাবে, ভারত তা ভাবে কাল’।