মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল গত মাসের শেষে। তার বদলে শুক্রবার সল্টলেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র অফিসে যাবেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া।
নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত ১৩ জনের অন্যতম মুকুল। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় এসে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের কিছু নেতানেত্রীর কাছে ‘বিশেষ সুবিধা’ চান তিনি। তার পরিবর্তে কয়েক জন তাবড় নেতার হাতেই প্রচুর টাকা তুলে দেন বলে অভিযোগ। সেই টাকা দেওয়ার ছবি তুলে রাখেন গোপন ক্যামেরায়। তার বছর দুয়েক পরে, ২০১৬ সালে নারদ চ্যানেলে সেই ছবি দেখিয়ে নেতানেত্রীদের টাকা নেওয়ার খবর ফাঁস করে দেন ম্যাথু।
আরও পড়ুন: আমি ক্যাপ্টেন হলে মুকুল হলেন ধোনি, আমি খিচুড়ি হলে মুকুল ঘি: দিলীপ
সেই নারদ-কাণ্ডের তদন্তে নেমে অভিযুক্ত অন্যদের মতো মুকুলকেও ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। অক্টোবরের শেষে ইডি-তে হাজির হওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই সময়ে তিনি ছিলেন দিল্লিতে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার তৎপরতা চলছিল। মুকুল জানিয়েছিলেন, ওই সময়ে আসতে পারবেন না। খুব শীঘ্রই কলকাতায় পৌঁছে জানাবেন, কবে হাজিরা দেওয়া যায়। সেই অনুযায়ী মুকুল সোমবার কলকাতায় আসার পরে ইডি-র সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। শুক্রবার তিনি হাজিরা দেবেন বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়েই নারদ-কাণ্ডে তাদের প্রাথমিক তদন্তের কাজ শেষ হবে। নারদে যে-তেরো জন নেতানেত্রীর নামে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের মধ্যে তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ মারা গিয়েছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে এক বার করে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। বাকি আছেন শুধু মুকুল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে অপেক্ষা করা হবে শুধু মেয়র ও মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্নাদেবীর জন্য। রত্নাদেবী অবশ্য নারদ-কাণ্ডে সরাসরি অভিযুক্ত নন। সে-দিক থেকে মুকুলকে জেরার পরেই তদন্তের প্রাথমিক কাজ শেষ হবে ইডি-র।
নারদ-কাণ্ডের মূল তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। অভিযুক্তদের জেরার পাশাপাশি তাঁদের কে কোথায় বসে ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন, সেই সব জায়গার ছবি তুলছে সিবিআই। কিন্তু তারাও এখনও পর্যন্ত মুকুলের অফিসে গিয়ে ছবি তুলতে পারেনি। কারণ মুকুল যে-অফিসে বসে ম্যাথুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলে অভিযোগ, ওই অভিযুক্ত সেই ভাড়ার ফ্ল্যাটটি ছেড়ে দিয়েছেন। ছবি তোলা যায়নি অভিযুক্ত পুলিশকর্তা এসএমএইচ মির্জার দফতরেরও। সেই সব ছবি তোলার পরে সিবিআইয়ের প্রাথমিক পর্বের তদন্ত শেষ হওয়ার কথা।