মদের ঝগড়ায় বন্ধুকে খুনের অভিযোগে শনিবারই ধরা পড়েছিল দুই কিশোর। পাঠানো হয়েছিল কৃষ্ণনগরের সরকারি হোমে। সোমবার, সেখান থেকেই তাদের হাজির করানো হয়েছিল শহরের জুভেনাইল জাস্টিস আদালতে।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীর আবেদন খারিজ করে জুভেনাইল জাস্টিস আদালত এ দিনও দুই কিশোরকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হোমের ঠিকানাতেই ফেরত পাঠিয়েছেন।
তবে, জামিন না মেলায় তেমন হেলদোল চোখে পড়েনি দুই কিশোরের। হোমে ফিরে, বিকেলের খাবার খেয়ে দিব্যি, দেওয়াল জোড়া মিকি মাউসের কার্টুন ঘুরে ঘুরে দেখেছে দুই কিশোর। ছবির কদর করতেও দেখা গিয়েছে দু’জনকে।
সন্ধ্যায়, আর পাঁচজন আবাসিকের সঙ্গে পা ছড়িয়ে বসে টিভি-তে দেখেছে ‘ডিসকভারি চ্যানেল’। হাঙরের দাঁত কিংবা মাসাইমারার গেমপার্কে সিংহের শিকার দেখে শিউরেও
উঠছে কখনও।
খেতে যাওয়ার আগে, বোর্ডের দু’কোণায় দাঁড়িয়ে ক্যারম পেটানোর উৎসাহেও ভাঁটা পড়েনি তাদের। ঘুঁটি ফেলতে না পারার আফশোসে হাত কামড়াতেও দেখা গিয়েছে তাদের।
যা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন হোমের ওয়ার্ডেন।
তার পর, রাতের খাওয়া সেরে হোম কর্তৃপক্ষের কাছে মশারি চেয়ে নিয়ে দু’ঘরে ঘুমোতে গিয়েছে দু’জনে। তবে এই সময়েই তাদের মধ্যে উত্তপ্ত কথা কাটাকাটি শুনে এগিয়ে আসতে হয়েছিল হোমের ওয়ার্ডেনকে। ঝগড়ায় এ-ওকে দুষেছে, ‘তোর জন্যই এমন ভুগতে হচ্ছে!’ পরস্পরের দোষারোপের মাঝেই দু’জনকে দু’ঘরে পাঠিয়ে দেন হোমের কর্তারা।
শনিবার টানা জেরার মুখে তাদের মাথা ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা, স্নায়ুর উপরে নিয়ন্ত্রণ দেখে চমকে গিয়েছিল পুলিশ। রাতের ঝগড়াটুকু বাদ দিলে, এ দিনও তাদের নির্বিকার হাবভাব দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন হোমের আবাসিক ও কর্মীরা।
ওদের আচরণ দেখে হোমের এক কর্মী বলছেন, ‘‘ছেলে দু’টি কী ধাতুতে গড়া বলুন তো? ক’দিন ধরে ওদের উপর এত কিছু ঘটে গেল, তারপরেও এমন নির্বিকার কেউ থাকতে পারে!’’