শূন্যস্থান: বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভা। মঙ্গলবার ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
রামনবমী পালনে বিপুল হইচই। কিন্তু হনুমান জয়ন্তী উৎসবে বিশেষ লোক জুটল না বিশ্ব হিন্দু পরিষদের।
ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে মঙ্গলবার ‘ধর্মসভা’ থেকে অযোধ্যায় বিতর্কিত স্থানেই রাম মন্দির গড়ার ডাক ফের দেন পরিষদের আন্তর্জাতিক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন। আগামী বছর রামনবমী এবং হনুমান জয়ন্তী অযোধ্যার রাম মন্দিরে গিয়ে পালন করার আহ্বানও জানান তিনি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতির’ সমালোচনা করে জৈন হুঙ্কার দেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ গেরুয়া যুগে প্রবেশ করেছে। এখানে গেরুয়া সরকার আসবে। তখন পুলিশ জেহাদিদের মেরে মেরে দেশভক্তি শেখাবে।’’ কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হল, জৈন-সহ হিন্দু নেতাদের গা গরম করা বক্তৃতা শোনার জন্য সেখানে বিশেষ ভিড়ই ছিল না।
এক মাস আগে ওই জায়গাতেই আর একটি সংগঠন হিন্দু সংহতির সমাবেশে ভিড়ের চাপে মানুষের হাঁটার জায়গাও ছিল না। কিন্তু এ দিন পরিষদের সভায় ওই রাস্তার একটা লেনও ভরেনি। রামনবমীর সাফল্যের উপর দাঁড়িয়েও এ দিন ‘ধর্মসভা’য় ভিড় কম হল কেন? পরিষদের তরফে সৌরীশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা আমাদের কলকাতা মহানগরের কর্মসূচি ছিল। তাই অন্য কোনও জেলা থেকে কর্মীরা আসেননি। আর আমরা সংগঠিত সভা করে ভিড় দেখানোর চেষ্টাও করিনি। সুতরাং, যা ভিড় হয়েছে, ঠিকই আছে।’’ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘এ রাজ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কোনও অস্তিত্ব নেই। এখানে প্ররোচনা দিয়ে লাভ হবে না।’’
এ দিন সভায় এবং তার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে কালিয়াচক, খাগড়াগড়-সহ বিভিন্ন ঘটনার উদাহরণ দিয়ে মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হন জৈন। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘হিন্দু এ বার জেগেছে। আপনি শুধরে যান। না হলে রাষ্ট্রভক্ত জনতা জেহাদির প্রতি মমতা দেখানো মমতাকে বেশি ক্ষণ মমতা দেখাবে না।’’
জৈন জানান, রাজ্যসভায় বিজেপি-র সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাম মন্দির বিল পাশ করানোর সুযোগ আছে। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মিলে অযোধ্যায় রাম মন্দির বানানোর স্বপ্ন পূরণ করবেনই। জৈনের কথায়, ‘‘মোদীজি চমক দিতে পছন্দ করেন। আপনারা এক দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ খবরের কাগজে রাম মন্দিরের চমকটা দেখতে পাবেন।’’