পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে সরব। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই ও ফাইল চিত্র (ডানি দিক)।
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গণতন্ত্র ‘নিহত’ হয়েছে বলে আজ সরব হলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে কোনও সরকারি মঞ্চ থেকে নয়। টুইট বা বিবৃতি দিয়েও নয়। রাজ্য বিজেপির দাবি মেনে বাংলার অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ জানালেও সরাসরি কারুর দিকে আঙুল তোলেননি তিনি।
দলীয় সদর কার্যালয়ে এসে কর্নাটক জয়ের কথা বলার পরে মোদী পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন। বারাণসীর সেতু দুর্ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশের সঙ্গেই যোগ করেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে। মোদীর কথায়, ‘‘কাউকে দোষ দেওয়ার জন্য নয়, গণতন্ত্রের কথা ভেবেই এই কথা বলা হচ্ছে।’’
এ দিন কর্নাটকের ফল দেখে মমতা দেবগৌড়াকে ফোন করে বিজেপিকে সমর্থন না করার পরামর্শ দেন। সনিয়া গাঁধীর প্রস্তাব মেনে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের পক্ষে দেবগৌড়ার উপর চাপ দেন তিনি। ক্ষুব্ধ বিজেপি তখনই সিদ্ধান্ত নেয় মমতার বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক হতে হবে। গত কাল পঞ্চায়েত নির্বাচনের অশান্তি প্রসঙ্গে বিজেপি দলীয় ভাবে প্রতিক্রিয়া জানালেও প্রধানমন্ত্রী নীরব ছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রিপোর্ট চায় নবান্নের কাছ থেকে। আজ মুখ খুলে মোদী বলেন, ‘‘কাল অনেক নির্দোষ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূল ছাড়া সব রাজনৈতিক দলকেই এর শিকার হতে হয়েছে। নিহত হয়েছে গণতন্ত্র।’’
আরও পড়ুন:
হিংসা চলছেই, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১
১৯ জেলায় ৫৭৩ বুথে আজ ভোট
বুথ বাঁচানো দূর অস্ত্, মার খেয়েছে পুলিশই
বিজেপি শিবির বলছে ভেবেচিন্তেই অন্য দলগুলির উপর হামলার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ বিজেপির কৌশল হল, সন্ত্রাস নিয়ে যত সুর চড়ানো যাবে, ততই ভবিষ্যতে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস-সিপিএম জোট করার প্রশ্নে নীতিগত ভাবে সমস্যা হবে। আজই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে ঘরোয়া ভাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে জানানো হয়েছে যে, ২৫ মে শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পারছেন না তিনি। ফলে শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর একত্র বৈঠকের সম্ভাবনাও অস্পষ্ট। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বভারতীকে এখনও চিঠি দেননি মমতা।
সন্ধ্যায় মোদী বলেন, ‘‘মনোনয়ন থেকে ভোটগ্রহণ, সব ক্ষেত্রে অশান্তি হয়েছে। এখন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, বিচারব্যবস্থা কাউকে না কাউকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।’’ এই অভিযোগের জবাবে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আগে নিজের দলকে নিয়ন্ত্রণ করুন। বাংলায় সবচেয়ে বেশি মারা গিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরাই। কর্নাটকে জিততে না পেরে হতাশ হয়ে এখন বিরোধীদের আক্রমণ করতে চাইছেন।’’ চুপ নেই অমিত শাহও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, ‘‘তাঁর সভাপতিত্বে এত জন কর্মী এ রাজ্যে মারা গেলেন বলে অমিতজি দুঃখপ্রকাশ করেছেন!’’