—প্রতীকী ছবি।
দাবি, পরীক্ষা তো দেনইনি, চাকরির পরীক্ষার ফর্মও পূরণ করেননি। কিন্তু ‘পিএসসি’র (পাবলিক সার্ভিস কমিশন) ওয়েবসাইটে খাদ্য দফতরের ইনস্পেক্টর পদে সফলদের তালিকায় তাঁর নাম নাকি রয়েছে। এবং অভিযোগ, সেই চাকরি ‘দেওয়ার জন্য’ ওই যুবকের কাছ থেকে সাত লক্ষ টাকা চেয়েছেন নদিয়ায় কর্মরত এক শিক্ষক ও তাঁর সঙ্গীরা। টাকা না দিলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে— এই অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মালদহের চাঁচলের মালতীপুরের যুবক গোলাম সারওয়ার আলম সিদ্দিকী। খাদ্য দফতরের ইনস্পেক্টর পদে নিয়োগের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। হাই কোর্টের নির্দেশ তার তদন্ত করছে সিআইডি। এই আবহে সারওয়ারের অভিযোগকে ঘিরে শোরগোল পড়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও অভিযোগকারী যুবকের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন নদিয়ার ভীমপুরের বাসিন্দা পরিমল কুণ্ডু। সে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন সারওয়ারের দাদা। সেই সূত্রেই পরিমলের সঙ্গে পরিচয় হয় সারওয়ারের। ২০২১ সালে পরিমল নদিয়ায় বদলি হয়ে যান। কিন্তু যোগাযোগ ছিল তাঁদের। অভিযোগ, মাস দু’য়েক আগে পরিমল ফোন করে সারওয়ারকে জানান যে, ২০১৮ সালের ‘ফুড ইনস্পেক্টর’ পদের যে পরীক্ষা হয়, সেই প্যানেলে তাঁর চাকরি করে দেবেন। পরিবর্তে, তাঁকে সাত লক্ষ টাকা দিতে হবে। অভিযোগ, এ ভাবে অনেকের চাকরি হয়েছে দাবি করে কিছু নথিও সারওয়ারকে দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের প্যানেল নিয়ে তদন্তের বিষয়টি সারওয়ারের জানা ছিল। দাবি, সে জন্য তিনি তখন বলেন, ‘‘আগে ওয়েবসাইটে নাম উঠুক, তার পরে টাকা দেব।’’
১৪ জুন পিএসসির ওয়েবসাইটে নিজের নাম দেখে চোখ কপালে ওঠে সারওয়ারের। অভিযোগ, এর পর টাকা চেয়ে তাঁকে বার বার ফোন করা হচ্ছে। বলা হয়, ৭৫ হাজার টাকা দিলেই নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। বাকি টাকা নিয়োগপত্র পাওয়ার পরে দিতে হবে। কিন্তু টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শেষে, শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সারওয়ার।
সারওয়ার বলেন, “পরিমল কুণ্ডুর সঙ্গে আরও বেশ কয়েক জন রয়েছে। তারা প্রভাবশালী দাবি করে পরিমল আমাকে হুমকি দিচ্ছে। ওর আরও এক সঙ্গী হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমি ফর্ম পূরণই করিনি। ফলে, দুর্নীতি যে হচ্ছে, তা আমি নিশ্চিত। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ যদিও পরিমলের দাবি, ‘‘একেবারেই ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমি নাম তোলার কে? কে তুলেছে, তা আমি কী ভাবে বলব!’’