Examination

Examination: দিল্লির দুই বোর্ড পরীক্ষা নিলেও ফের সংশয়ের কাঁটা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে

শিক্ষক শিবিরের অনেকে বলছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের তো টিকাকরণ হচ্ছে। টিকার জোড়া ডোজ় হয়ে গেলে ওদের জন্য স্কুল খুলে দেওয়া দরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

অতিমারির মধ্যেই দিল্লির দুই বোর্ড সিআইএসসিই বোর্ড এবং সিবিএসই অফলাইনে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা নিয়েছে। এপ্রিলে পরবর্তী সিমেস্টারের পরীক্ষাও হবে অফলাইনে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে ফের সংশয় তৈরি হল বলেই মনে করছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, সর্বভারতীয় জোড়া বোর্ড যদি পারে, পশ্চিমবঙ্গ পারে না কেন? পারবে না কেন?

Advertisement

শিক্ষক শিবিরের অনেকে বলছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের তো টিকাকরণ হচ্ছে। টিকার জোড়া ডোজ় হয়ে গেলে ওদের জন্য অন্তত অবিলম্বে স্কুল খুলে দেওয়া দরকার।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের মন্তব্য, এখন সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলি কার্যত রেশনের দোকান হয়ে গিয়েছে। করোনার জন্য গত দেড় বছর ধরে ক্লাস বন্ধ থাকা অবস্থায় স্কুলে শুধু মিড-ডে মিলের সামগ্রী, স্কুলের পোশাক ও সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। পড়াশোনা বলতে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ বা গৃহপাঠ দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের।

Advertisement

অভিভাবকদের প্রশ্ন, যদি রেস্তরাঁ, পানশালা খুলে রাখা যায়, তা হলে ৫০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে অন্তত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুল কি চালু রাখা যেত না? স্কুলগুলি অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো তৈরি করতে পেরেছে কি? করোনার দীর্ঘস্থায়ী প্রকোপের বিষয়টি বিবেচনা করে গত দেড় বছরে স্কুলগুলিতে অনলাইনে পড়ানোর মতো পরিকাঠামো তৈরি করা হল না কেন?

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশও স্বীকার করছেন, শহরাঞ্চলের কিছু স্কুলে অনলাইনে ক্লাস হলেও গ্রামাঞ্চলের স্কুলে অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামোই নেই। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, “অনলাইন ক্লাসের উপরে গুরত্ব দেওয়ার কথা বলছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু অনলাইন ক্লাস কী ভাবে নেওয়া হবে, গত দেড় বছরে শিক্ষা দফতর থেকে তার কোনও রূপরেখা দিতে পারেনি। স্কুলে ওয়াইফাই পরিকাঠামো তৈরি করতে পারলে শিক্ষকেরা স্কুলে এসেও অনলাইন ক্লাস নিতে পারতেন। অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না, অফলাইন ক্লাসও বন্ধ। সব মিলিয়ে করোনাকালে আর্থিক ভাবে দুর্বল পড়ুয়ারা ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে।”

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের মতে, দ্বাদশ শ্রেণির অনেক পড়ুয়া তাঁদের জানিয়েছে, স্কুল বন্ধ থাকায় তারা বিভিন্ন ধরনের কাজে নামতে বাধ্য হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য তারা কাজ থেকে ছুটি নিয়ে ফর্ম পূরণ করে আবার কাজে চলে যাবে। যদি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়, তা হলে ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দেবে। আর গত বারের মতো পরীক্ষা যদি না-হয়, তা হলে গত বার যেমন ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করে গিয়েছিল, এ বার তারাও সেই ভাবে পাশ করবে। এক শিক্ষক বলেন, “কাজে চলে যাওয়া ওই সব পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করে একটা সুযোগ নিয়ে দেখছে, যদি তালেগোলে উচ্চ মাধ্যমিকটা পাশ করা যায়। তা হলে একটা ডিগ্রি হয়ে গেল তাদের।”

পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, “পড়াশোনা ও পরীক্ষার নমুনা যদি এই হয়, তা হলে ক’জন আর এই ধরনের সরকারি স্কুলে পড়তে চাইবে? অভিভাবকেরা তো ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলেই দেবেন। রেস্তরাঁ, পানশালা খুলে রাখা গেলে নবম থেকে দ্বাদশ কি খুলে রাখা যেত না?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement