আগেই হতে পারত, বিতর্ক এড়িয়েও বললেন মমতা

কলকাতা হাইকোর্টের আয়োজনে সার্কিট বেঞ্চের আনুষ্ঠানিক সূচনার মঞ্চ। সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম তোলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

Advertisement

অনির্বাণ রায় ও শুভঙ্কর চক্রবর্তী

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৮
Share:

আলাপচারিতা: সার্কিট বেঞ্চের সূচনা মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। শনিবার জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

কলকাতা হাইকোর্টের আয়োজনে সার্কিট বেঞ্চের আনুষ্ঠানিক সূচনার মঞ্চ। সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম তোলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তিনি বলেন, “গত ফেব্রুয়ারি মাসে জলপাইগুড়ি বেঞ্চের ঘোষণা করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’’ এই মঞ্চে এর আগে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক সার্কিট বেঞ্চের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “জলপাইগুড়ির বেঞ্চের জন্য রাজ্য এখনও পর্যন্ত ৪০ কোটি টাকা ব্যয় করলেও, কেন্দ্র কোনও টাকা দেয়নি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘অজানা কারণে’ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে ৬ মাস সময় লেগে গেল। সব শেষে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘কোনও বির্তকে যেতে চাই না। তা সত্ত্বেও বলি, এই বেঞ্চ হয়তো আরও আগেই হয়ে যেতে পারত।’’

Advertisement

এ দিন অভ্যাগতদের মধ্যে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। তাঁর সময়ে যে সার্কিট বেঞ্চের কাজ অনেকটাই এগিয়েছিল, তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “জ্যোতির্ময়বাবু যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছিলেন।’’ গত বছর হাইকোর্টের ফুল বেঞ্চ যখন জানিয়ে দেয়, ১৭ অগস্ট বেঞ্চের কাজ শুরু হবে, তখন জ্যোতির্ময়বাবুই প্রধান বিচারপতি। প্রশাসন সূত্রের খবর, সে সময় কেন্দ্রের আইন মন্ত্রক থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি ছাড়া বেঞ্চ উদ্বোধন করা যাবে না।

তার পরেই পুরো প্রক্রিয়া থমকে যায়, দাবি রাজ্য প্রশাসনের একটি বড় অংশের। হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও কেন রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হচ্ছে না, তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন শুরু হয়। ছ’মাসের মাথায় ফেব্রুয়ারির গোড়ায় প্রথমে বিষয়টিকে ছাড়পত্র দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা, তার পরে রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তার ঠিক এক দিন পরে, ৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারের মাঠে দশ মিনিটের সরকারি সভায় সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন রাজ্যপালের বক্তৃতায় ফেব্রুয়ারির সেই ঘোষণার উল্লেখ ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীর সভাস্থল, দায়িত্ব রাজ্যকেই

শনিবার জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া সার্কিট বেঞ্চের আদালত ভবন চত্বরের পাশেই সূচনা অনুষ্ঠান হয়েছে। মঞ্চে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সার্কিট বেঞ্চ চালুকে জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের ‘স্বপ্ন পূরণ’ বলে বর্ণনা করে বলেন, “আজ থেকে এই এলাকায় নতুন যুগ শুরু হল। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টের ফুলকোর্ট জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই স্বপ্ন বাস্তব হতে তিন দশক সময় লাগল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement