প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্য থেকেই শূন্য পদ পূরণ করা হবে। ফাইল চিত্র।
তোড়জোড় শুরু হয়েছিল এক যুগ আগে। অবশেষে প্রার্থীদের একাংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং মামলা-মকদ্দমার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন পদ তৈরি এবং শূন্য পদ পূরণের প্রস্তাব অনুমোদন করল রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়েছে। আপাতত ওই দু’ধরনের পদ মিলিয়ে দু’টি জেলায় ৭১০৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হবে।
এতে প্রার্থীদের বড় অংশ এবং শিক্ষক সংগঠন কিছুটা আশ্বস্ত হলেও দাবি উঠছে, সমস্যা তো শুধু দু’টি জেলায় নয়, সারা রাজ্যেই। তাই সব জেলাতেই অবিলম্বে সব শূন্য পদে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে।
বৈঠকের পরে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, উত্তর ২৪ পরগনা ও মালদহ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষকের ৩১৭৯টি নতুন পদ তৈরি করবে সরকার। পাশাপাশি, ৩৯২৫টি শূন্য পদও পূরণ করা হবে। ২০০৯ সাল থেকে এই নিয়োগের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। এ দিন মন্ত্রিসভা তাতে অনুমোদন দিল। মুখ্যসচিব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্য থেকেই শূন্য পদ পূরণ করা হবে।
ওই দুই জেলায় নিয়োগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হণ্ডা বলেন, ‘‘শুধু উত্তর ২৪ পরগনা ও মালদহ নয়, সব জেলাতেই প্রাথমিক স্কুলে যে-সব পদ শূন্য আছে, সেগুলিতে শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে।’’ আনন্দবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা ভোটের আগে ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৪ সালে যাঁরা টেট পাশ করেছেন এবং দু’বছরের ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁদের নিয়োগ করা হবে। এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৩১ হাজার। ‘‘সরকারি হিসেব অনুযায়ী এ-পর্যন্ত প্রাথমিকে ১৬,৫০০ পদে নিয়োগ হয়েছে। বাকি ১৪,৫০০ প্রার্থীর নিয়োগেও অনুমোদন দেওয়া উচিত ছিল,’’ বলেন ওই শিক্ষক-নেতা।
এ দিকে, ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও যে-সব প্রার্থীর নাম মেধা-তালিকায় রাখা হয়নি, নিয়োগের দাবিতে তাঁরা আজ, মঙ্গলবার ‘সিঙ্গুর দিবস ও কথা রাখো দিবস’ উপলক্ষে ‘সিঙ্গুর চলো’ কর্মসূচি নিয়েছেন। ‘২০১৪ প্রাইমারি টেট পাশ প্রশিক্ষিত নট ইনক্লুডেড ক্যান্ডিডেটস একতা মঞ্চ’-এর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী প্রাথমিকে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের সংগঠনের সদস্যেরা এখনও নিয়োগপত্র পাননি। এই নিয়ে তারা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদেও অনেক বার অভিযোগ জানিয়েছে। তাদের সদস্যেরা আজ বিভিন্ন জেলা থেকে সিঙ্গুরের কর্মসূচিতে আসছেন বলে জানিয়েছে ওই সংগঠন। ইতিমধ্যে ২০১৪ সালের টেটের যে-তালিকার ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই সম্পূর্ণ তালিকা তলব করেছে কলকাতা হাই কোর্ট।