ছবি: সংগৃহীত।
ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়ো ফুটেজের ভিত্তিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ঐক্য মঞ্চ। শুক্রবার রাতে প্রকাশ্যে আসা ওই ভিডিয়ো ফুটেজে (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) দেখা যাচ্ছে, মোমবাতি মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে উপাচার্য পাশের এক যুবককে বলছেন, ‘বাইক-বাহিনী নিয়ে চলে এস...’। বিশ্বভারতীর তরফে অবশ্য ওই ভিডিয়ো ফুটেজে যে গলা শোনা যাচ্ছে, তা উপাচার্যের নয় বলে দাবি করা হয়েছে।
গত ১৫ জানুয়ারি রাতের অন্ধকারে বিশ্বভারতীর বিদ্যাভবন বয়েজ় হস্টেলে ঢুকে ছাত্রদের উপরে হামলা হয়। তাতে গ্রেফতার হওয়া অচিন্ত্য বাগদি, সাবের আলি বক্সরা উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে ছাত্রছাত্রীদের দাবি। এ বার এই ভিডিয়ো সামনে আসায় বিতর্ক আরও বেড়েছে। পৌষমেলা শেষ হওয়ার পরে স্টল তুলতে যাওয়া নিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দোকান ‘লুট’ ও মহিলার ‘শ্লীলতাহানি’র অভিযোগ উঠেছিল গত ডিসেম্বরে। সেই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তার প্রতিবাদে ৭ জানুয়ারি মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োয় ওই মিছিলের ছবিই দেখা যাচ্ছে। ওই মিছিলে হামলায় ধৃত অচিন্ত্যও উপস্থিত ছিল বলে দাবি ছাত্রছাত্রী ঐক্য-মঞ্চের।
আগামী দিনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঐক্য-মঞ্চ। কাল, সোমবার প্রতিবাদ মিছিলও হবে। ঐক্য-মঞ্চের সদস্য ফাল্গুনী পাল, সোমনাথ সৌ শনিবার বলেন, ‘‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মতো এনআরসি, সিএএ, এনআরপি-র বিরদ্ধে প্রতিবাদে শামিল বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীও। ৮ জানুয়ারি বিজেপি সমর্থিত সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের সিএএ নিয়ে যে এক তরফা বক্তৃতা ছিল, তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছিল। সেই আক্রোশেই ১৫ তারিখ ছাত্রাবাসে ও হাসপাতালে পড়ুয়াদের উপর আক্রমণ হয়েছিল।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ওই হামলা যে উপাচার্যের নির্দেশে হয়েছে, সেটা এই ভিডিয়োয় স্পষ্ট।’’
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবসের বার্তায় ধনখড়ের নিশানায় মমতাই
ঘটনার নিন্দা করে বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর অভিযোগ। এ এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়, অধ্যাপক সংগঠনের অফিসে তালা দেওয়া হয়, কর্মী ও অধ্যাপক সভার ভাগ্য জোটে শো-কজ, সাসপেনশন ও বদলি। এমন উপাচার্যের হাতে এই আশ্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’’ বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োয় যে স্বর শোনা গিয়েছে, তা উপাচার্যের নয়। উনি এই বিশ্ববিদ্যালয় যোগ দেওয়ার পরেই শুদ্ধিকরণের কাজে হাত দিয়েছেন। তাতে যাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, তারাই কারচুপি করে ভিডিয়ো বানিয়ে উপাচার্য ও বিশ্বভারতীকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে। সেই প্রচেষ্টাকে ধিক্কার জানাই।’’ কারা এর পিছনে, জানতে তদন্ত হবে বলেও তিনি জানান।