খোঁড়া বাদশাকে আদালতের নিয়ে যাওয়ার পথে।
ছ’বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচার প্রক্রিয়া চলার পর, বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে সংগ্রামপুর বিষমদ-কাণ্ডের রায় ঘোষণা হল। তাতে খোঁড়া বাদশা সহ ৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী। খোঁড়া বাদশার স্ত্রী শাকিলা বিবি-সহ ৬ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে সাজা ঘোষণা করবেন আগামী কাল। তবে এখনও এই মামলার দু’জন অভিযুক্ত অধরা।
২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে মগরাহাট, উস্তি-সহ ডায়মন্ড হারবার মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় ১৭২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বিষমদ খেয়ে। মগরাহাট এবং উস্তি এবং মন্দিরবাজার থানাতে তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম দু’টি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে।
তদন্তে উঠে আসে, যে চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, তা বানাত কুখ্যাত চোলাই ডন নুর ইসলাম ফকির ওরফে খোঁড়া বাদশা। দু’টি পৃথক মামলায় খোঁড়া বাদশা, তার স্ত্রী শাকিলা বিবি-সহ মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৭, ৩২৬, ৩২৮,২৭২ এবং ২৭৩ ধারাতে এবং পশ্চিমবঙ্গ আবগারি আইনের ৪৬৯(এ) ধারায় দু’মাসের মধ্যে চার্জশিট দেয় সিআইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল।
‘খোঁড়া বাদশা’র খোঁজে সেলিমও, দাবি সিআইডি-র
চোলাই বিক্রি করলেই জরিমানা ৫০ হাজার
উস্তির মামলায় বিচার শেষ বলে জানিয়েছেন বিচারক। সেই মামলায় শুক্রবার রায় দান করবেন বিচারক। এই মামলায় মোট অভিযুক্তের সংখ্যা খোঁড়া বাদশা, শাকিলা বিবি-সহ ১২ জন। ১১৪ জন এই মামলায় সাক্ষী দিয়েছেন। তদন্তকারী অফিসার শিমূল সরকার বলেন, “রাজ্যে এই প্রথম বিষমদের কোনও মামলায় কাস্টডি ট্রায়াল বা অভিযুক্তদের জেলবন্দি রেখে বিচার সম্পন্ন হল। মূল অভিযুক্তরা কেউ জামিন পায়নি।”
বিষমদ-কাণ্ডের অন্য মামলাটির বিচারও শেষ পর্যায়ে। বৃহস্পতিবার বিচারক মামলার তদন্তকারী আধিকারিকের সাক্ষ্য গ্রহন করেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ নভেম্বর। উস্তির মামলায় দোষী সাব্যস্ত অভিযুক্তরা সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারে বলে জানাচ্ছেন সরকারি আইনজীবীরা। বিশেষ সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারার প্রথম পরিচ্ছেদে দোষী হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।” তিনি বলেন, এই মামলা নিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সেই বাধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যা আইনের জয়। উল্টোদিকে খোঁড়া বাদশার আইনজীবী মহম্মদ আবু বক্কর ঢালি বলেন, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)