গতিধারা প্রকল্পে পাওয়া গাড়ির হাত বদলের নিয়ম বদলাল। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকারের প্রকল্পে পাওয়া গাড়ি এ বার থেকে হাতবদল করা যাবে। সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছে তারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই পরিবহণ ক্ষেত্রে একটি প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে। সেই প্রকল্পে বলা হয়, কোনও যুবক যদি নিজে গাড়ি কিনে ব্যবসার করতে চান, সেক্ষেত্রে সেই গাড়ি কেনার জন্য একাংশ ঋণের বন্দোবস্ত করে দেবে পরিবহণ দফতর।
‘গতিধারা’ নামকরণ করে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সরকার ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্তও আরোপ করেছিল। শর্তে বলা হয়েছিল, গাড়িটি কোনও ভাবেই বিক্রি করা যাবে না। এমনকি গাড়িটির পারমিটও হাতবদল করা যাবে না। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতিধারা প্রকল্পে বিশেষ পরিস্থিতি সরকারি ঋণে কেনা গাড়িটির মালিকানা বদলের পাশাপাশি, পারমিট হস্তান্তরও করা যাবে। কোনও গাড়ির মালিক যদি গাড়ি না চালিয়ে পারমিট জমা দিতে চান, তাহলে সেই কাজেরও অনুমতি দিয়েছে পরিবহণ দফতর। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগে পারমিট জমা দিয়ে প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে সরকারি ভর্তুকির টাকা আনুপাতিক হারে ফেরত দিতে হবে।
নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গাড়ির ঋণ শোধের প্রক্রিয়া চলার সময়ে যদি কোনও গাড়ির মালিকের মৃত্যু হয়, তাহলে সেই গাড়ির পারমিট তাঁর আত্মীয়ের নামে বদল করা যাবে। সঙ্গে বলা হয়েছে, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনাগ্রস্থ হওয়ার পর চলাচলের অনুপযুক্ত হলে গাড়ির পারমিট জমা দিয়ে বেশ কিছু শর্তপূরণ করে আবার নতুন গাড়ি কেনা যাবে।
এত দিন সরকারি প্রকল্পে কেনা গাড়ির মালিকের মৃত্যু হলে বা গাড়ি দুর্ঘটনায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলে, বিকল্প কোনও ব্যবস্থা ছিল না। পারমিটে নাম বদল যেমন করা যেত না, তেমনই নতুন গাড়ি কেনার পারমিটও পাওয়া যেত না। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পরিবহণ দফতরে নানা অভিযোগ জমা পড়েছিল। এই সমস্যার স্থায়ী কোনও সমাধান করা যায় কিনা, তা নিয়ে দীর্ঘ সময়ে আলোচনাও চলেছিল। অবশেষে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে নীতিবদলের ঘোষণা করল পরিবহণ দফতর। পরিবহণ দফতরের এমন সিদ্ধান্তে খুশী গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি কেনা মালিকরা। এক গাড়ির মালিকের কথায়, সরকার এই প্রকল্প এনে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু কোনও বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বিকল্প পথে সমাধানের রাস্তা ছিল না। এখন সেই রাস্তা খুলে যাওয়া আমাদের পক্ষেও গাড়ির ব্যবস্যা করতে সুবিধাই হবে।