লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের প্রশাসনিক মহলে। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের প্রশাসনিক মহলে। সেই পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনকেও প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশের দিন পিছিয়ে গেলেও, অন্য যাবতীয় প্রস্তুতিতে ঢিলেমি দিতে নারাজ কমিশনের শীর্ষকর্তারা। সম্প্রতি কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশ পাঠিয়েছে তারা। সেই নির্দেশে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছে আধিকারিকদের। তিন ধাপে এই প্রশিক্ষণ হবে বলে জানানো হয়েছে। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ধাপে ধাপে এই প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হবে মার্চ মাসে। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশের পরেই রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, ২০২৪-এ লোকসভা ভোট হবে যথা সময়েই। কারণ, ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধনের পর কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি লোকসভা ভোট এগিয়ে আনতে পারে বলে ধারণা তৈরি হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু নতুন এই নির্দেশিকাটি আসার পরে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের ধারণা নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট মেনে এপ্রিল এবং মে মাসেই হবে লোকসভার নির্বাচন।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, লোকসভা নির্বাচনের সেক্টর অফিসারদের প্রশিক্ষণ চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণ চলবে মোট তিন দফাতে। ১৭ এবং ১৮ জানুয়ারি হবে প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ পর্ব। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করতে হবে। তৃতীয় দফার প্রশিক্ষণ ১৫ মার্চের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। তাই রাজ্য প্রশাসনের একাংশ ধরেই নিচ্ছে, নির্বাচনী আধিকারিক এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে যখন এই সময় সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, তখন আর ভোট এগিয়ে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার আরিজ আফতাব এই সংক্রান্ত বিষয়ে জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। জেলা এবং মহকুমা পর্যায়ে সেক্টর অফিসারদের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেক্টর অফিসারদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতেও বলা হয়েছে ওই নির্দেশে। কারণ এক একটি লোকসভা এলাকায় ভোট পরিচালনা করতে সেক্টর অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একটি সেক্টর অফিসের আওতায় ৮-১০টি করে বুথ থাকে। তাই সেক্টর অফিসারদের প্রশিক্ষণ পর্বে ত্রুটি থেকে গেলে গোটা ভোট প্রক্রিয়াতেই ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সুষ্ঠু ভাবে যাতে এই প্রশিক্ষণ পর্বের আয়োজন করা যায় সে বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
সেক্টর অফিসার ছাড়াও, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতর ও সংস্থা থেকে ভোটকর্মীদের তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে এসেছে। বুথে যে সব ভোটকর্মী কাজ করবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ দ্রুত এবং একাধিক পর্যায়ে শুরু করার জন্য রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনগুলির তরফে আবেদন জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। ভোটকর্মী ঐক্য মঞ্চের তরফে স্বপন মণ্ডল বলেন, “নতুন যে শিক্ষানীতি কেন্দ্রীয় সরকার চালু করেছে তাতে বলা হয়েছে আমাদের শিক্ষা-বর্হিভূত কোনও কাজ করানো চলবে না। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা দাবি করব যে ভারতের নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারের সেই নীতিকে মান্যতা দেবে। সঙ্গে প্রশিক্ষণ ঠিক সময় দেওয়া হোক, যাতে ভোট প্রক্রিয়ায় নতুন কোন প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলে তাতে যেন ভোটকর্মীরা অসুবিধায় না পড়েন।”