নিরাপদ সর্দার। — ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের মামলায় এফআইআর বিতর্কে কলকাতা হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য পুলিশ।
নিরাপদর বিরুদ্ধে সন্দেশখালি থানায় অভিযোগ জমা পড়ার আগেই পুলিশ কী ভাবে এফআইআর দায়ের করেছিল, তা জানতে চেয়েছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন রিপোর্ট জমা পড়ার পরে নিরাপদকে পাকাপাকি জামিনও দিয়েছে কোর্ট। পুলিশের রিপোর্টের প্রতিলিপি অবশ্য নিরাপদর আইনজীবীদের হাতে দেওয়া হয়নি। রিপোর্ট নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ আলাদা করে কোনও মন্তব্যও করেনি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি নিম্ন আদালতে জামিন পাওয়ার পরে ফের তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই মামলায় দেখা যায়, পুলিশ ৯ ফেব্রুয়ারি যার ভিত্তিতে এফআইআর করেছে, সেই অভিযোগ তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার শাগরেদ ভানু মণ্ডল জমা দিয়েছেন ১০ ফেব্রুয়ারি। নিরাপদর জামিন মঞ্জুরের পাশাপাশি বিচারপতি বসাক মন্তব্য করেন, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ অফিসারদের কেন গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হবে না?
পুলিশের এমন ‘সক্রিয়তা’ দেখে অবশ্য অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছিল যে, পুলিশ কি জানত ভানু কী অভিযোগ জমা দিতে আসবেন? তার ফলেই কি আগেভাগে এফআইআর তৈরি করে রেখেছিল? এ দিন সকালে অবশ্য রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এফআইআরের ওই তারিখ-বিভ্রান্তিকে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ বলে দাবি করেন। তাঁর বক্তব্য, “ভুল হলে সেটি ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত, তা দেখা উচিত।” তাঁর দাবি, ভানু অভিযোগ জানানোর পরেই এফআইআর রুজু করা হয়েছে। সেই প্রমাণ পুলিশের হাতে আছে। গোটা বিষয়টি হাই কোর্টে জানানো হবে বলেও সকালেই জানান সুপ্রতিম।
আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, ভুল হয়ে থাকলে এত দিনে তা শুধরে নেওয়া হল না কেন? কেনই বা নিম্ন আদালতেও তা নজরে এল না? হাই কোর্টের মামলার শুনানিতেও বা সরকারি কৌঁসুলি কেন প্রথম দিন সদুত্তর দিতে পারেননি?
এক প্রাক্তন পুলিশকর্তার কথায়, “এমন ভুল হলে সেই পুলিশের দক্ষতা এবং যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়।” নিরাপদর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, নিম্ন আদালতেও বিষয়টি নজরে আসেনি। হাই কোর্ট বলেছে, বিষয়টি নিম্ন আদালতেই উত্থাপন করতে হবে এবং বিষয়টি প্রমাণিত হলে পুরো মামলাই খারিজ হয়ে যেতে পারে।