নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের আগে আবাস-বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে লিখিত ভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস এবং একশো দিনের কাজের প্রকল্পের উপর তাদের অনুসন্ধানের রিপোর্ট দ্রুত চেয়েছে রাজ্য।
১৭ ডিসেম্বর দিল্লি যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। সরকারি ভাবে যা বলা হয়েছে, তাতে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, একশো দিনের কাজ এবং আবাস প্রকল্পে দীর্ঘদিন ধরেই বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে একাধিক বার প্রশাসনিক ভাবে চিঠি পাঠানো বা রাজনৈতিক ভাবে আন্দোলন হলেও, সমাধানসূত্র অধরাই রয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য অনুরোধ করেছে, তারা যেন কেন্দ্রীয় দলের অনুসন্ধান রিপোর্টগুলি দ্রুত জানানোর ব্যবস্থা করে। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যে সাতটি কেন্দ্রীয় দল ফের ওই দুই প্রকল্পের নজরদারি করেছে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা পড়ার কথা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। রাজ্য চাইছে, রিপোর্ট জমা পড়া মাত্র তা যেন পাঠানো হয়। রাজ্য প্রশাসনিক মহলের যুক্তি, অতীতে ওই দুই প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র যা পরামর্শ দিয়েছে বা সংশোধনের সুপারিশ করেছে, তা সবই পালন করা হয়েছে। অথচ তার পর থেকে বহুবার কেন্দ্রীয় দল ঘুরে গিয়েছে রাজ্যে। কিন্তু তার রিপোর্ট সময়মতো পাওয়া যায়নি। ফলে বোঝা সম্ভব হয় না, কোন যুক্তিতে এখনও বন্ধ রয়েছে বরাদ্দ।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘সাতটি কেন্দ্রীয় দলের দেওয়া রিপোর্ট কেন্দ্র যেন দ্রুত পাঠায় তা বলা হয়েছে লিখিত ভাবে। তাতে কোনও পদক্ষেপের দরকার থাকলে তা দ্রুত করা সম্ভব। আগে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছিল কেন্দ্র, যা তাদের দল ঘুরে যাওয়ার অন্তত ছ’মাস পরে। ফলে এটাও তেমন দেরি হলে অযথা বরাদ্দ আটকে থাকবে। সমস্যায় থেকে যাবেন গরিব উপভোক্তারা।’’
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, গত বারের রিপোর্টে এমন কিছু বড় মাপের গাফিলতি কেন্দ্র ধরতে পারেনি, যার জেরে বরাদ্দ আটকে থাকা যুক্তিযুক্ত। কার্যত সেই নির্বিষ রিপোর্টের পরেও একাধিক পদক্ষেপ করে কেন্দ্রকে তার তথ্য পাঠিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু তার পরেও কাজ হয়নি। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের অনুমান, আসন্ন বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন মমতা। সম্ভবত সেই কারণে লিখিত ভাবে ফের এক বার মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।