গঙ্গাসাগর মেলায় বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবনের উন্নয়নে তৈরি হচ্ছে মাস্টার প্ল্যান। বুধবার সাগরে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই মাস্টার প্ল্যানে রাস্তা-ঘাট সেতু সবই আনতে চাইছেন তিনি। প্ল্যান তৈরি করে দ্রুত কেন্দ্র সরকারের নীতি আয়োগে পাঠাবে রাজ্য সরকার।
সুন্দরবন এলাকার মধ্যে পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ১৩টি ব্লক। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেশিরভাগ ব্লকেই বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এলাকায় নোনা জল ঢুকে চাষবাসও ঠিক মতো হয় না। এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে একাধিক বিধায়ক স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আবেদন জানান। বিভিন্ন এলাকায় সংযোগকারী সেতু তৈরি ও সংস্কারেরও আর্জি জানান তাঁরা। পাশাপাশি পর্যটন শিল্পকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেন। জবাবে সুন্দরবনের উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান তৈরির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সুন্দরবন এলাকায় আরও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে পর্যালোচনা করে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। এই মাস্টার প্ল্যান কেন্দ্র সরকারের নীতি আয়োগে জমা দেওয়া হবে। মাস্টার প্ল্যানে জোর দেওয়া হবে সুন্দরবনের নদীবাঁধে। বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সুন্দরবন বিধ্বস্ত। প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে বাঁধ মেরামত করে। কিন্তু আমরা চাই স্থায়ী সমাধান।” পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার কথা বলেন মু্খ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, এর ফলে কর্মসংস্থান বাড়বে। তিনি জানান, কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবারের মৎস্যহাবকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হবে। মৎস্যজীবীদের জন্য ফিশিং ক্রেডিট কার্ডের উপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রয়োজন হলে সরকারের কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।সুন্দরবনে তথ্যপ্রযুক্তি হাব গড়ার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “সুন্দরবন এলাকার ছেলে মেয়েরা পড়াশোনায় খুব ভাল। কোনও কোনও পরিবারে ট্রিপল এমএ আছে। তথ্যপ্রযুক্তি হাব হলে কর্মসংস্থান হবে।” সাগরে নোনা জলে নোনা স্বর্ণ জাতের ধান চাষ ভাল হয়। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগর মেলায় ও বিশ্ব বাংলা স্টলে এই ধান প্রদর্শন করার নির্দেশ দেন। তাছাড়া জয়নগরে মোয়া ও গুড়ের হাব তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এ দিন সুন্দরবনের পানীয় জল নিয়ে বেশ কিছু প্রকল্প ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। এ দিন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জেলার ৫৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর জন্য মোট ব্যয় হবে ২৭০ কোটি টাকা। এগুলির মধ্যে বেশিরভাগই সুন্দরবন এলাকার। এ দিন ২৯টি নতুন প্রকল্পের শিলান্যাসও করেন মুখ্যমন্ত্রী। কুলতলিতে বাঘটিকে অক্ষত অবস্থায় জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়ায় বন দফতর, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসনকে রাজ্য সরকার পুরষ্কৃত করবে বলে জানান তিনি।