প্রতীকী ছবি।
হোটেল, রেস্তরাঁ বন্ধ। বড় পরিসরে সামাজিক অনুষ্ঠানও হচ্ছে না। তবুও রাজ্যের আরও কয়েকটি সংগঠনের মতো অসহায় মানুষের মুখে খাবার জুগিয়ে চলেছে ‘রবিনহুড আর্মি’। আবেদন-নিবেদন করেই খাবার সংগ্রহ এঁদের কাজ। কলকাতা বা রাজ্যের শহরেই নয়, এই দলের কাজকর্ম পৌঁছে দিয়েছে অন্য দেশেও। কী ভাবে তাঁরা এই কাজ করেন, তা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও আলোচনার বিষয় হয়েছে।
এই দলের জাতীয় স্তরের অন্যতম সক্রিয় সদস্য নমিতা তানেজা জানান, কয়েক বছর ধরে এই কাজ তাঁরা করছেন। সেই বাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নাম লেখাতে পারেন যে কোনও পেশায় থাকা, যে কোনও বয়সের মানুষ। তবে অর্থ দিলে হবে না, দিতে হবে খাবার বা খাদ্যশস্য। নমিতার কথায়, ‘‘এত দিন বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁ থেকে বাড়তি খাবার সংগ্রহ করে তা পৌঁছে দেওয়া হত নিরন্ন মানুষের কাছে। কিন্তু করোনা-কালে হোটেল-রেস্তরাঁ বন্ধ। এখন স্বল্প পরিসরে খুললেও বাড়তি খাবার মিলছে না। তাই বিভিন্ন নাগরিক ও বাণিজ্যিক সংস্থা খাদ্যশস্য দান করেছে। তা দিয়েই কাজ চলছে।’’
প্রতি বছরই স্বাধীনতা দিবসের আগে বড় আকারে প্রকল্প শুরু হয়। এ বার করোনা পরিস্থিতি, পশ্চিমবঙ্গে আমপানের দাপট তাকে বাড়তি মাত্রা দিয়েছে। এ রাজ্যে দলের অন্যতম নেত্রী, পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মৌমিতা দেব জানান, কলকাতা এবং লাগোয়া দুই জেলা ছাড়াও শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে তাঁদের স্বেচ্ছাসেবী দল রয়েছে। তাঁরাই এই প্রকল্প চালাচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগনার ন্যাজাট ও আশপাশের গ্রামেও কাজ চলছে। তবে সবই চলছে স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও দূরত্ববিধি মেনেই।
মৌমিতা জানান, দলে যেমন তথ্যপ্রযুক্তির চাকুরে, চিকিৎসক রয়েছেন তেমনই কিশোর এবং প্রচুর বৃদ্ধও যুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি, লকডাউনে দেখলাম, প্রচুর মানুষ জীবিকা হারিয়েছেন। ফলে সামান্য খাবার জোটাতেও সমস্যা হচ্ছে। সেটাই বেশি করে আমাদের ভাবিয়েছে। সামান্য খাদ্যশস্য দিয়ে যদি কিছু দিনের সমস্যাও কমানো যায়, তাই বা কম কী!’’