বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের উপরে তিনি কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন না।— ফাইল চিত্র।
পাঁচ দিন ধরে কমবেশি ৩৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবু মুচিপাড়া থানা এলাকার তোলাবাজির মামলায় নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেনি লালবাজার। মঙ্গলবারের পরে বুধবারেও তাঁকে বেশ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মুচিপাড়া থানায়। পুলিশের দাবি, ম্যাথুর কাছ থেকে আরও অনেক কিছু জানার বাকি আছে। তাই আগামী ১২ জুলাই আবার হাজির হওয়ার জন্য তাঁকে এ দিনই সমন ধরানো হয়েছে।
ম্যাথু মঙ্গলবার দাবি করেছিলেন, ২০১৪-’১৫ সালের আয়কর রিটার্ন তিনি কলকাতা পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তকারীদের অভিযোগ, ম্যাথু ওই বছরের আয়কর রিটার্নের নথিপত্র তাঁদের কাছে জমা দেননি। এ দিন সেই নথি নিয়েই তাঁকে থানায় হাজির হতে বলা হয়েছিল।
ম্যাথুর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের আরও অভিযোগ, তিনি তাঁর তিনটি মোবাইল ফোনের একটিও এখনও তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেননি। বুধবার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের পরে ম্যাথু দাবি করেন, তাঁর আইফোনটি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি হায়দরাবাদের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে জমা দিয়েছেন। বাকি দু’টি ফোনের একটি হারিয়ে গিয়েছে। আর অন্যটি বিকল। ম্যাথু এ দিন বলেন, ‘‘হারিয়ে যাওয়া ফোনের আইইএমআই নম্বর দেখে ওই ফোন খুঁজে বার করে নেওয়ার জন্য আমি তদন্তকারীদের অনুরোধ করেছি।’’
পুলিশের দাবি, ওই আইফোন দিয়েই ম্যাথু নারদ স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন। বিহারের সাংসদ ডি পি যাদবের বিরুদ্ধেও ওই ফোন দিয়েই স্টিং অপারেশন করা হয়। ওই সাংসদের কাছে কয়েক লক্ষ টাকা তোলা চাওয়া হয়েছিল। তোলা চাওয়ার ঘটনায় ম্যাথু জড়িত বলে পুলিশের অভিযোগ। তাই ওই ফোনটি কলকাতা পুলিশের দরকার।
সন্ধ্যায় মুচিপাড়া থানা থেকে বেরিয়ে ম্যাথু বলেন, ‘‘আপাতত স্বস্তি পেলাম। তবে ১২ জুলাই আবার মুচিপাড়া থানায় আসতে হবে।’’
এ দিন সিবিআইয়ের কলকাতা কার্যালয়েও গিয়েছিলেন ম্যাথু। তদন্ত সংস্থা সূত্রের খবর, সেখানে তাঁকে দিয়ে একটি ভিডিও ফুটেজ চিহ্নিত করানো হয়েছে। ওই ফুটেজে দুই ব্যবসায়ীকে দেখা গিয়েছে। ম্যাথু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করেছেন। এ দিনই কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করার জন্য ম্যাথুকে পরামর্শ দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনার পরে ম্যাথু জানান, তোলাবাজির মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য মঙ্গলবারেই তিনি মুচিপাড়া থানার তদন্তকারীদের অনুরোধ করেন। তাতে অন্তত তাঁর হয়রানি বন্ধ হবে।