বঙ্গে উন্মুক্ত শৌচ মুক্তি প্রকল্পের লক্ষ্য পূরণ নিয়ে সংশয়

রাজ্যের ১২৫টি পুরসভার মধ্যে ৫২টি এখনও উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত নয়।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩০
Share:

—ফাইল চিত্র।

বার বার তিন বার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত (ওডিএফ) প্রকল্পে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, হলে কবে হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।

Advertisement

রাজ্যের ১২৫টি পুরসভার মধ্যে ৫২টি এখনও উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত নয়। একদা রাজ্য সরকারের হিসেব অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা পুরসভার সংখ্যাটা অবশ্য ছিল ৪২। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ ভারত মিশনের মাপকাঠিতে তা হয়েছে ৫২। পশ্চিমবঙ্গের ৫২টি পুরসভাকে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করার লক্ষ্য পূরণে প্রথমে মাত্রা সময়সীমা ধার্য হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর। ওই সময় পর্যন্ত কাজ অনেক বাকি থাকায় দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর করা হয়। কিন্তু তাতেও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো যায়নি। তাই তৃতীয় দফায় সেই সময়সীমা আরও ১৬ দিন বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা শেষ হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর।

তৃতীয় দফায় বর্ধিত সময়সীমারও বাকি আছে আর মাত্র ছ’দিন। ফলে চলতি বছরে উন্মুক্ত শৌচ মুক্তির লক্ষ্যমাত্রা যে পূরণ হবে না, তা কার্যত মেনে নিচ্ছেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তারা। তাঁদের আশা, এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরে ৫২টির মধ্যে ২৫টি পুরসভাকে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করা যাবে। বাকি ২৭টি পুরসভায় কবে ওই কর্মসূচি সম্পূর্ণ হবে, সেই বিষয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে রাজি নয় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। তবে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যের সব পুরসভাকে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করে তোলার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। সে-ক্ষেত্রে আরও অন্তত এক দফা সময়সীমা বাড়াতেই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতাকে ঘিরে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন বাড়তি সতর্ক। কয়েকটি জেলায় অশান্তি-বিক্ষোভ হয়েছে। তেমন একটি জেলায় উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত নয়, এমন পুরসভার সংখ্যা বেশি। এই অবস্থায় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এই প্রকল্প ব্যাহত হচ্ছে। কারণ, জেলা প্রশাসনের কর্তারা বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে ব্যস্ত। তা সত্ত্বেও সময়সীমার মধ্যে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করা যাবে বলেই দাবি পুরকর্তাদের।

এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য যুগ্মসচিব পর্যায়ের ১০ অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছিল পুর দফতর। ওই ১০ জন অফিসার ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই উদ্যোগ উন্মুক্ত শৌচ প্রকল্পের যথাযথ রূপায়ণে অনেকাংশে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

শুধু উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করলেই দায় শেষ হবে না রাজ্য সরকারের। সঙ্গে রয়েছে ‘ওডিএফ প্লাস’ এবং ‘ওডিএফ প্লাস প্লাস’ করার কাজও। ‘ওডিএফ প্লাস’ মানে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করার ক্ষেত্রে জলের জোগান, সেই শৌচের কাঠামো এবং বাড়ি নির্মাণ-সহ বিভিন্ন বিষয় ঠিকঠাক আছে কি না, তা দেখা। আর এই প্রকল্পটিকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রক্রিয়া হল ‘ওডিএফ প্লাস প্লাস’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement