AITC

Mobile Phone & Leaders: মোবাইল হইতে সাবধান! একের পর এক ঘটনায় ভয়ে নেতারা, এই বুঝি সব রেকর্ড হয়ে গেল

অতি উৎসাহী সমর্থকদের মোবাইল ক্যামেরায় ঘরোয়া গোপন বৈঠকের আলোচনা ধরা পড়ে। পরে সেই ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেওয়াতেই বিপত্তি হচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২২ ১৮:২০
Share:

সম্প্রতি মোবাইল ফোনে ঘরোয়া বৈঠকের ভিডিয়ো ফাঁস হাওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও শ্রীকান্ত মাহাতো। গ্রাফিক্স - সনৎ সিংহ

মোবাইল হইতে সাবধান! এখন এমনই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে রাজনীতিকদের মধ্যে। জনসভা থেকে নানা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সেলফির আবদার থাকেই। সেই আবদারই অনেক সময় ডেকে আনে বিপদ। কোনও গোলমেলে লোকের সঙ্গে সেলফি তুলে বিপাকে পড়েছেন, এমন নেতার সংখ্যা কম নয়। সেই বিপদের পাশাপাশি ইদানীং আর এক আতঙ্ক গ্রাস করেছে রাজনীতিকদের। সেটি ভিডিয়ো-ভীতি।অতি উৎসাহী সমর্থকরা মোবাইল ক্যামেরায় ঘরোয়া গোপন বৈঠকের আলোচনা ধরে রাখছেন। পরে সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে চলে এলেই বিপাকে পড়ছেন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা। তাতেই একের পর এক বিতর্কে ফেঁসে যাচ্ছেন ‘নির্বিবাদী’ হিসেবে পরিচিত নেতারাও।

Advertisement

রবিবার যেমনটা ঘটেছে, প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর সঙ্গে। নিজের বিধানসভার এলাকার শালবনির এক প্রত্যন্ত গ্রামের বৈঠকে বসেই তিনি কিছু বিতর্কিত কথা বলেছিলেন দিন কয়েক আগে। কিন্তু সে কথাই কোনও এক অতি উৎসাহী সমর্থক মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করেছিলেন। রবিবার সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ঘোরতর বিপাকে পড়েন শালবনির তিন বারের বিধায়ক। ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই কালবিলম্ব না করে মন্ত্রীকে একেবারে শোকজ নোটিস ধরায় দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি। শেষমেশ ভুল স্বীকার করে রক্ষা পান মন্ত্রীমশাই।

দিন কয়েক আগে আরও এক মন্ত্রী এমনই মোবাইল ফোনে তোলা ভিডিয়োয় তোলা বক্তব্য নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন। তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই একটি ঘরোয়া বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বান্ধবীর বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই শাসক দল তৃণমূলকে বিরোধী শিবিরের নেতারা ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন। সেই আক্রমণের জবাবে ওই ঘরোয়া বৈঠকে শোভনদেব বলে বসেন, ‘‘কেউ আমাকে চোর বললে তাকে ঘুসি মারব।’’

Advertisement

এক সময় ভারতীয় বক্সিং দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন শোভনদেব। ভারতীয় দলের হয়ে শ্রীলঙ্কায় অধিনায়কত্বও করেছেন তিনি। এমনকি ভারতের জন্য খেতাবও জিতেছেন তিনি। কিন্তু রাজনীতির আঙিনায় কখনওই তাঁকে কুকথা বলতে শোনা যায়নি। সেই শোভনদেবের মুখ থেকে ঘুসি মারার কথা খানিক বেমানান লেগেছিল আমজনতার। তিনিও এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন মোবাইল ফোনকেই।

বিগত বিধানসভা ভোটের সময় কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভায় বর্ষীয়ান নেতা মুকুল রায় প্রসঙ্গে বিরূপ মন্তব্য করে মোবাইল ক্যামেরায় ধরা পড়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। আবার ২০১৯ সালে কৃষ্ণনগরে কর্মীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ভিডিয়ো বিড়ম্বনা বাড়িয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের। সেই ভিডিয়োটিও তোলা হয়েছিল মোবাইল ফোনের ক্যামেরাতেই। আবার কংগ্রেস ছেড়ে কেন তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, সেই ব্যাখ্যার ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ায় বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের বর্তমান তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান। কম-বেশি সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই মোবাইল ক্যামেরার ফাঁদে পড়েছেন। তাই শোনা যাচ্ছে, সব রাজনৈতিক দলের নেতাদেরই এখন মনের কথা ‘মোবাইল হইতে সাবধান’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement