বাঁ দিকে, রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং ডান দিকে, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের অনুমতি দিল না রাজ্য পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজ্যপুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, মঙ্গলবারের ওই অভিযানের জন্য প্রথমে পুলিশের কাছ থেকে কোনও অনুমতি চাওয়া না হলেও সোমবার দুপুরে দু’টি ইমেল আসে। কিন্তু তাতে বেশ কয়েকটি সমস্যা থাকায় পুলিশ দুই সংগঠনেরই নবান্ন অভিযানেরই অনুমতি দেয়নি। একই সঙ্গে পুলিশ ব্যাখ্যা করে এ-ও জানিয়েছে, ঠিক কেন অনুমতি দিতে পারেনি তারা?
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্নে যাওয়ার ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ এবং সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কিন্তু রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বার্মা সোমবার সকালে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, তাঁদের কাছে ওই মিছিলের জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। এমনকি, তাঁদের জানানোও হয়নি। এই মর্মে মঙ্গলবারের মিছিলকে অবৈধ বা বআইনি বলে মন্তব্য করে তাঁরা জানিয়েছিলেন, নবান্নের কাছে ওই মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সেখানে নতুন ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা আইনে ১৬৩ ধারা (পুরনো ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা) জারি থাকে। অর্থাৎ সেখানে পাঁচ জন বা তাঁর বেশি জমায়েত বেআইনি। সোমবার সকালের সেই সাংবাদিক বৈঠকের পরেই তাঁদের কাছে দু’টি ইমেল এসে পৌঁছয় বলে জানিয়েছেন সুপ্রতিম।
এর মধ্যে একটি ইমেল পাঠিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। কিন্তু তাঁরা কোনও অনুমতি চাননি। তাঁরা শুধু পুলিশকে জানিয়েছেন যে, মঙ্গলবার একটি অরাজনৈতিক কর্মসূচি নিতে চলেছে তারা। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে নবান্নে অভিযান যাবে ছাত্রসমাজ। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্র সমাজের ওই ইমেলে অনুমতি তো চাওয়া হয়ইনি। পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টের নিয়ম মেনে কর্মসূচি সংক্রান্ত যে সমস্ত জরুরি তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয়, যেমন তাঁরা কোন পথে এগোবেন, কী কর্মসূচি , কোথায় অবস্থান করবেন, সেই সব তথ্যও জানানো হয়নি। আর সেজন্যই ওই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।
দ্বিতীয় ইমেলটি এসেছিল সংগ্রামী যৌথমঞ্চের তরফে। সেই ইমেলে নিয়ম মেনে অনুমতি চাওয়া হলেও তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ নবান্নের কাছে ওই ধরনের কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। সুপ্রতিম জানিয়েছেন, দুই সংগঠনকেই জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাজ্যে নেট পরীক্ষা রয়েছে। একটি পূর্ণ কর্মদিবস। তাই পরীক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই তাঁদের ওই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কিন্তু অন্য যেকোনও দিন নবান্ন ছাড়া হাওড়ার যেকোনও জায়গায় যদি তাঁরা কর্মসূচি পালন করতে চান, তবে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সাহায্যই করবে। একই সঙ্গে সুপ্রতিম জানিয়েছেন, নবান্নে মঙ্গলবার স্বাভাবিক কাজ কর্ম হবে। আর পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করবে পুলিশ।