সুস্থ থাকতে হাঁটাহাটি করা ভাল। ছবি: সংগৃহীত।
ফিটনেস নিয়ে নিত্যনতুন ধারণা তৈরি হয় মাঝেমধ্যেই। যেমন, নতুন চল ৪০ মিনিটে ৪ কিলোমিটার হাঁটা। সুস্থ থাকতে হাঁটাহাটি করা ভাল, এ তথ্য সকলেই জানেন। কিন্তু গবেষণা চলছে হাঁটার ধরন, সময়— সব কিছু নিয়ে।
তারই মধ্যে চর্চায় ৪০ মিনিটের হাঁটাহাটি। তবে শর্ত হল, এই সময়ে যেতে হবে ৪ কিলোমিটার। তবে অলস পদচারণা নয়, হাঁটতে হবে দ্রুত বেগে। আর তাতেই হবে কার্ডিয়োভাস্কুলার ব্যায়াম।
কী লাভ এমন শরীরচর্চায়?
চিকিৎসকেরা মানছেন কাজের চাপ, শরীরচর্চার অভাব, উদ্বেগ, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা নানা রকম অসুখ ডেকে আনছে। হার্টের সমস্যা তার মধ্যে একটি। দিল্লির পুষ্টিবিদ বিধি চাওলা বলছেন, ‘‘৪০ মিনিট ধরে হাঁটা অথবা জগিং মধ্যম মানের শরীরচর্চার তালিকায় পড়ে। কার্ডিয়োভাস্কুলার হেলথ বা হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে যা অত্যন্ত কার্যকর। শুধু ব্যায়ামে কিন্তু এতটা লাভ হয় না।’’ হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য দ্রুত গতিতে হাঁটা অত্যন্ত উপকারী মানছেন হার্টের রোগের চিকিৎসক বনিতা অরোরা। দিল্লির এই চিকিৎসক বলছেন, ৪০ মিনিটে ৪ কিলোমিটার হাঁটার এই শরীরচর্চা হার্টের জন্য উপকারী।
ওজন কমাতেও সহায়ক: হাঁটহাটি করলে ওজন কমে। ৪০ মিনিট ধরে শুধু হাঁটার বদলে জগিং বা দ্রুত গতিতে হাঁটা সেই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করে। এতে মেদ ঝরে তাড়াতাড়ি।
লাভ আর কী?
এমন শরীরচর্চার ফলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। হাঁটাহাটিতে পেশিও মজবুত হয়। রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও হাঁটা জরুরি বলেন চিকিৎসকেরা। টাইপ টু ডায়াবিটিস কমাতেও সহায়ক দ্রুত হাঁটাহাটি।
পুষ্টি
তবে এমন হাঁটার নিয়মকানুন আছে। পুষ্টিবিদের মতে, যেহেতু ৪০ মিনিট হাঁটতে হচ্ছে, তাই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় হালকা খাবার আগে খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীর নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে হাঁটার শক্তি পাবে। শুরুতে খাওয়া যেতে পারে বাদামের মাখন মাখানো পাঁউরুটি বা অল্প কিছুটা ওট্স। জগিং হোক বা জোরে হাঁটা, পেশি ক্লান্ত হয়ে পড়লে খেতে হবে প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। আখরোট, পেস্তার মতো বাদাম সেই চাহিদা পূরণ করতে পারে। জলাভাব যাতে না হয় এবং গরমের দিনে ঘাম ঝরলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য যাতে বজায় থাকে সে জন্য কলা, ডাবের জল খাওয়া যেতে পারে। তালিকায় রাখতে হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার।
লক্ষ্য অর্জনে নিয়ম বদল: শরীরচর্চার সুফল বেশি মাত্রায় পেতে হলে কখনও জগিং, কখনও জোরে হাঁটা, কখনও আস্তে হাঁটা এ ভাবে হাঁটার গতিকে ভাগ করে নেওয়া যায়। এতে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
পুষ্টিবিদ বলছেন, ‘‘ ৪০ মিনিটে ৪ কিলোমিটার হাঁটার চ্যালেঞ্জের অন্যতম লক্ষ্যই হল হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখা। তবে তার সঙ্গে উপযুক্ত পুষ্টি, স্বাস্থ্যকর খাওয়া অর্থাৎ ডায়েটও গুরুত্বপূর্ণ।’’
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। শরীরচর্চা শরীরের পক্ষে ভাল হলেও, সকলের জন্য একই নিয়ম খাটে না। তাই যে কোনও শরীরচর্চা নতুন করে করতে হলে পেশাদার ফিটনেস প্রশিক্ষকের বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।