ছত্রধর মাহাতো। —ফাইল চিত্র।
যাবজ্জীবন কারাবাস থেকে তাঁকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল আদালত। মাস ছয়েক আগে জেল থেকে বেরিয়ে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হয়েছেন ছত্রধর মাহাতো। সদ্য গঠিত তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে অন্যতম সম্পাদক করা হয়েছে ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন এই নেতাকে। ছত্রধরের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের পুরনো দু’টি মামলা নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলা আদালত থেকে মামলার নথি চেয়েও পাচ্ছিল না তারা। তবে গত সপ্তাহে জেলা আদালত সেই নথি তুলে দিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ব্যাঙ্কশাল কোর্টের এনআইএ-এর বিশেষ আদালতের বিচারক গত ১৬ জুন ওই দুই মামলার অভিযুক্তদের ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে কলকাতার আদালতে হাজির করাতে বলে ঝাড়গ্রাম জিআরপিকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, ঝাড়গ্রাম জেলা আদালতও যাতে এই দু’টি মামলা সংক্রান্ত সমস্ত নথি এনআইএ’র হাতে তুলে দেয় সেই নির্দেশও দিয়েছিল বিশেষ আদালত। তারপরেও গত দু’মাস ধরে মামলার নথি তাগাদা দিয়েও ঝাড়গ্রাম থেকে মেলেনি বলে অভিযোগ এনআইএ-র। পুলিশও দুই মামলার অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করায়নি। গত সপ্তাহে মামলার নথি হাতে পেয়েছে এনআইএ।
২০০৯ সালে লালগড় থানায় দায়ের হওয়া সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন ছত্রধর। গ্রেফতার হন তিনি। তাঁকে জেল থেকে ছাড়াতে সে বছরই ২৮ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের কাছে বাঁশতলা হল্ট স্টেশনে ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস একপ্রকার পণবন্দি করে নিয়েছিল জনসাধারণের কমিটির সদস্যরা। এনআইএ গত ১ এপ্রিল এই দু’টি মামলা হাতে নিয়ে দিল্লিতে নতুন মামলা রুজু করে।
তৃণমূলের অন্দরের অনেকের অবশ্য দাবি, বিজেপি বিরোধী অবস্থান নিলেই মোদী-শাহ জুটি এজেন্সি লেলিয়ে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে কমলনাথের সরকার ফেলার আগে তাঁর ভাইপো নকুল নাথের সংস্থা হোক বা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলৌতের ভাইয়ের সংস্থায় ইডি-সিবিআই হানা তার অন্যতম প্রমাণ। এমনকি মোদী-শাহের ‘এজেন্সি বিপ্লব’ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনও। যদিও রাজ্য বিজেপির একাংশের দাবি, প্রতিহিংসার রাজনীতির কারিগর তৃণমূল। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৪৪টি মামলা হয়েছে। অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ৮২টি মামলা। ফলে পিছিয়ে নেই রাজ্য পুলিশ বা সিআইডিও।