কলকাতা বিমানবন্দরে নতুন রাজ্যপালকে শাল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন ফিরহাদ। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় পৌঁছলেন বাংলার নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং রাজ্যের ডিজিপি এবং পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। বিমানবন্দরেই নতুন রাজ্যপালকে গার্ড অফ অনার দিয়ে স্বাগত জানানো হয়।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলার নতুন রাজ্যপালের বিমান অবতরণ করে। তার পরেই তিনি বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে রওনা হন। সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর গাড়ি প্রবেশ করে রাজভবনের ফটকে। সূত্রের খবর, বুধবারই বাংলার নতুন এবং স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেবেন আনন্দ। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করানোর কথা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের।
৫ দিন আগে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে প্রকাশ করা হয়েছিল তাঁর নিয়োগের চিঠি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূ সাক্ষরিত সেই চিঠিতে স্পষ্ট লেখা ছিল, ‘‘সি ভি আনন্দ বোসকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে নিয়োগ করা হল। তিনি যে দিন থেকে দায়িত্ব নেবেন সেই দিন থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে।’’ সেই নোটিসের ঠিক পাঁচ দিনের মাথায় দায়িত্ব নিতে কলকাতায় এসে পৌঁছলেন আনন্দ। বিমানবন্দরে উত্তরীয় পরিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান ফিরহাদ।
বাংলার নতুন রাজ্যপালকে স্বাগত জানিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘নতুন রাজ্যপালকে নিয়ে আমাদের অনেক আশা। ওঁর সম্পর্কে যা শুনেছি, তাতে মনে হয় উনি দারুণ কাজ করবেন।’’ অন্য দিকে, এক সাক্ষাৎকারে আনন্দ জানিয়েছেন, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় গুরুত্ব দিয়েই কাজ করবেন।
প্রাক্তন আইএএস আনন্দ বাংলার রাজ্যপাল পদে নিযুক্ত হওয়ার আগে মেঘালয় সরকারের উপদেষ্টা পদে ছিলেন। তার আগে কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর সচিব হিসাবে কাজ করেছেন। এ ছাড়াও কেরল সরকারের বিভিন্ন দফতরের প্রধান সচিব হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন। তবে রাজ্যপাল পদে এই প্রথম।
দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে জড়িত আনন্দ ২৯টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার পয়েছেন। লিখেছেন বিভিন্ন ভাষায় ৪০টি বই। যার মধ্যে উপন্যাস, কবিতার বইও আছে। বেশ কয়েকটি বেস্টসেলারও। সুবক্তা হিসাবে পরিচিত আনন্দের যদিও আরও একটি পরিচয় রয়েছে। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ম্যান অফ আইডিয়া’ নামে পরিচিত।
জন্ম কেরলের কোট্টায়ামে— ১৯৫১ সালের ২ জানুয়ারি। পদবি ‘বোস’ হলেও বাংলার নতুন রাজ্যপাল বাঙালি নন। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু বা কেরলে বাংলার সুভাষচন্দ্র বসু (বোস)-র নামে নাম রাখার রেওয়াজ আছে। সেই কারণেই তাঁর পদবি বোস বলে অনেকের অভিমত।