পরিচারিকারদের প্রশিক্ষণ দেবে রাজ্য শ্রম দফতর। ফাইল চিত্র
বাড়ির কাজে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনগুলি চালানোর জন্য গৃহ পরিচারিকাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করতে চলেছে রাজ্য শ্রম দফতর। কলকাতা তথা শহরতলি এলাকার আবাসনের বাসিন্দাদের বড় অংশই এখন যন্ত্র নির্ভর। তাঁরা জামা-কাপড় ধোয়ার কাজে ওয়াশিং মেশিন, ঘর পরিষ্কার করতে ভ্যাকিউম ক্লিনার ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, খাবার গরম করতে মাইক্রোওভেন, মশলা গুঁড়ো করতে মিক্সার-গ্রাইন্ডারের ব্যবহার বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মফস্সল থেকে কাজ করতে আসা গৃহ পরিচারিকারা এই ধরনের মেশিন চালাতে পারেন না। ফলে তাঁদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আবার এই সব যন্ত্র চালাতে না জানার জন্য অনেকেই কাজ পান না। তাই শ্রম দফতর ঠিক করেছে গৃহ পরিচারিকাদের রাজ্যজুড়ে এক বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণে যোগ দিলে দৈনিক হিসেবে ভাতাও দেবে সরকার।
ইতিমধ্যেই বারুইপুরে পরীক্ষামূলক ভাবে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। তাতে শতাধিক গৃহ পরিচারিকা যোগ দেন বলে দাবি শ্রম দফতরের। এখন লক্ষ্য, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি জেলায় এই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন। এই প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিতে গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্র চালানো শেখানো হবে। একই সঙ্গে গৃহ পরিচারিকাদের ব্যবহারিক আদব কায়দা, সামাজিক শিষ্টাচার, প্রাথমিক চিকিৎসা, ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কাজকর্মের বিষয়েও শেখানো হবে। প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্র দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়ে শ্রম দফতর। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নাম রাজ্য সরকারের তালিকাভূক্ত হবে। প্রসঙ্গত রাজ্য সরকার প্রশিক্ষিত কর্মীদের নাম নথিভূক্ত করার জন্য ‘এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক’ তৈরি করেছে আগেই। সেখানেই যুক্ত হবে গৃহ পরিচারিকাদের নাম। কেউ সরকারের মাধ্যমে বাড়িতে পরিচারিকা নিয়োগ করতে চাইলে তালিকাভূক্তরা সুবিধা পাবেন।
শ্রম দফতর সূত্রে খবর, প্রশিক্ষণে যোগ দিতে এসে পরিচারিকারা যাতে রোজগারহীন না হয়ে যান সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। তিনদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগদানের জন্য দৈনিক ২৫০ টাকা হিসেবে ভাতা দেওয়া হবে। দিনে ১২ ঘণ্টা ধরে চলবে প্রশিক্ষণ। তবে শ্রম দফতর দাবি করেছে, এমন কর্মশালার আয়োজন আগে হলেও এই প্রথম যন্ত্র ব্যবহার শেখানোকে প্রশিক্ষণের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।