'শিক্ষারত্ন' পেতে এখন থেকে শিক্ষকদেরই আবেদন জানাতে হবে। — ফাইল চিত্র।
শিক্ষারত্ন পেতে শিক্ষকদেরই আবেদন জানাতে বলল শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতরের কমিশনার একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসককে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা নিজেরাই অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষারত্ন পেতে আবেদন জানাতে পারবেন। তার জন্য একটি পোর্টাল চালু হচ্ছে মঙ্গলবার থেকে। আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষকরা শিক্ষারত্ন পেতে আবেদন জানাতে পারবেন।
অনলাইনে শিক্ষকরা আবেদন জানাতে পারবেন। আবেদন জমা শেষ হয়ে গেলে তা খতিয়ে দেখবে বিকাশ ভবন। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আবেদনপত্র দফতরে জমা পড়লে তা স্ক্রিনিং হবে। যুগ্ম অধিকর্তা চিন্ময়ী পট্টনায়েকের নেতৃত্বে চলবে এই শিক্ষরত্ন পুরস্কার দেওয়ার জন্য প্রার্থীবাছাই করার কাজ। এই কমিটিই শিক্ষারত্ন দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ৭১ জন প্রাথমিক শিক্ষক ও ৮২ জন মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক এই সম্মান পাবেন।
তবে শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতি। তাঁদের তরফে স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আগে বাম আমলে নিয়ম ছিল, শিক্ষা দফতরই গুণী শিক্ষকদের খুঁজে এই সম্মান দিত। সেই সময় এই সম্মানের নাম ছিল গর্ভনরস অ্যাওয়ার্ড। কিন্তু মমতার সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালের কেন্দ্রীয় সরকার বদলের পর মোদী সরকারের নীতিকে অনুসরণ করে তাঁরা শিক্ষকদেরই দরখাস্ত করতে বলে শিক্ষকরত্ন সম্মান পেতে। এই নিয়ম শিক্ষকদের জন্য অপমানজনক। এই প্রথার বিলোপের পক্ষে আমরা।’’
তবে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের এই এমন অভিযোগ মানতে চাননি পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ‘‘৩৪ বছর শিক্ষা দফতরকে কোন পর্যায়ে বামফ্রন্ট সরকার নিয়ে গিয়েছিল, তা রাজ্যের মানুষ জানেন। আগে তো সিপিএমপন্থী শিক্ষক না হলে পুরস্কার পাওয়া যেত না। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে শিক্ষকরা পুরস্কার পেতে নিজেরাই আবেদন করবেন। এখানে কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হবে না। বামপন্থী শিক্ষক বন্ধুরা এই স্বচ্ছতার দিকটা ভাল করে দেখলেই সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষকদের পুরস্কৃত করার বিষয়ে বদল আনে রাজ্য সরকার। প্রথম থেকেই শিক্ষকদের আবেদন জানাতে বলা হয়। তবে প্রথম দিকে এই আবেদন অফলাইনে নেওয়া হলেও, এখন অনলাইনে আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আবেদন জমা পড়ার পর তা বাছাইয়ের কাজ করবে শিক্ষা দফতরের একটি কমিটি। তারপর বাছাই করা শিক্ষকদের ডেকে জেলাভিত্তিক ইন্টারভিউ নিয়ে পুরস্কারের জন্য চূড়ান্ত করা হবে।