শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (বাঁ দিকে) জানতে চান রাজ্যপালের অভিযোগের সত্যাসত্য। —ফাইল চিত্র।
সকালে রাজ্যপাল অভিযোগ করেছিলেন, ‘হুমকি’ পেয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন রাজ্যের পাঁচ উপাচার্য। ভয় দেখিয়ে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল খোদ শিক্ষা দফতর। ঘটনাটির বিশদ বিবরণ দিলেও ওই উপাচার্যদের নাম বলেননি রাজ্যপাল। যদিও বৃহস্পতিবার রাতেই এই অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়ে শিক্ষা দফতরের চিঠি গেল তিন প্রাক্তন উপাচার্যের কাছে।
এই তিন উপাচার্যের মধ্যে একজন নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক চন্দন বসু। বাকি দু’জন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট )-এর দুই প্রাক্তন উপাচার্য। শিক্ষা দফতর তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছে, কারা পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল তাঁদের? হুমকিই বা দিয়েছিল কে?
সোমবারের মধ্যেই এই তিন জনকে প্রামাণ্য নথি-সহ প্রশ্নের উত্তর জমা দিতে বলা হয়েছে শিক্ষা দফতরের কাছে। বিকাশ ভবন চিঠিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা ওই শিক্ষকদের অভিযোগে উদ্বিগ্ন। তাঁদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা নিয়ে চিন্তিতও। রাজ্যপালের ভিডিয়োবার্তার বিশেষ অংশের উল্লেখ করে তাদের বলা হয়েছে, ‘‘রাজ্যপাল বলেছেন, আপনাদের পদত্যাগ করার জন্য শিক্ষ দফতর এবং শিক্ষা দফতরের ভারপ্রাপ্ত আইএএস কর্তারা চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।’’ চিঠিতে রাজ্যপালের আরও একটি দাবির উল্লেখ করে বিকাশ ভবন লিখেছে, ‘‘রাজ্যপাল তথা সম্মাননীয় আচার্য এ-ও দাবি করেছেন যে, তাঁকে বিশ্বাস করে আপনারা জানিয়েছিলেন হুমকির ভয়েই আপনারা পদত্যাগ করছেন।’’ রাজ্যপালের এই দুই দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ দাখিল করতে বলা হয়েছে উপাচার্যদের।
চিঠিকে বিকাশ ভবন জানিয়েছে, যদি তিন উপাচার্য এই দাবির প্রামাণ্য নথি যথাসময়ে জমা দিতে না পারেন, তবে ধরে নেওয়া হবে সম্মাননীয় আচার্যের দাবি অসত্য। তিনি রাজ্য সরকার এবং শিক্ষা দফতরের বদনাম করতেই এমন অভিযোগ এনেছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালেই রাজভবনের তরফে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োবার্তায় রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘যে পাঁচ জন উপাচার্য পদত্যাগ করেছিলেন তাঁরা নিজেরা আমাকে বলেছেন, তাঁদের জীবনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ভয়েই পদত্যাগ করেছেন তাঁরা। কারণ সরকারি অফিসার, মুখ্যমন্ত্রীর আইএএস অফিসার তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। শিক্ষা দফতরের তরফে তাতে উৎসাহও দেওয়া হয়েছিল।’’ ভিডিয়োবার্তায় রাজ্যপাল এই তথ্য দিয়ে স্পষ্ট বাংলায় বলেছিলেন, ‘‘আমি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং স্বামী বিবেকানন্দের নামে শপথ করে বলেছি, দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস এবং শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আমি শেষ পর্যন্ত এই লড়াই লড়ে যাব।’’
সেই ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ্যে আসার পরই বিকাশ ভবনের তরফে তিন উপাচার্যের কাছে চিঠি গেল বৃহস্পতিবার রাতে।