ব্যক্তিগত টিউশন পড়ানোয় স্কুল শিক্ষকদের শোকজ করল শিক্ষা দফতর। ফাইল চিত্র
গৃহশিক্ষকতা করা ও কোচিংয়ে পড়ানোর অভিযোগে প্রায় ৪০০ জনের বেশি স্কুল শিক্ষককে বিধিভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত করল শিক্ষা দফতর। সঙ্গে তাঁদের ধরানো হল শোকজ নোটিস। বুধবার জেলা শিক্ষা আধিকারিকের দফতর থেকে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি জেলাভিত্তিক বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের নাম দিয়ে তালিকা প্রকাশ করা শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। শোকজের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি স্কুলে চাকরি করা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত টিউশন পড়িয়ে শিক্ষার অধিকার আইন ভঙ্গ করেছেন তাঁরা। তাই তাঁদের এ বিষয়ে কারণ জানাতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের ২০০ জন, বর্ধমানের ১৬৫ জন শিক্ষককেও এই অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে শিক্ষা দফতর। বুধবার বাঁকু়ড়া জেলার ৫৫ জন শিক্ষককে এই শোকজ নোটিস ধরানো হয়েছে।
চলতি বছর জুন মাসের ২৭ তারিখে এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করে শিক্ষা দফতর। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়, সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা আর গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না। এমনকি, যুক্ত থাকতে পারবেন না কোনও রকম কোচিং সেন্টারের সঙ্গেও। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ স্কুলগুলিতে কর্মরত কোনও শিক্ষক গৃহশিক্ষকতা বা কোনও রকম কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এমনকি বিনা পারিশ্রমিকে কোথাও ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতেও পারবেন না। স্কুল শিক্ষা দফতরের অধীন নির্দেশালয় এই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করার পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনস্থ জেলার আধিকারিকদের মারফত স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকদের কাছেও সেই নির্দেশ দেয়।সম্প্রতি বিভিন্ন জেলা থেকে স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা নিয়ে নানা অভিযোগ আসছিল। সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার পরে নতুন করে আবারও নির্দেশিকা জারি করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তাই গত ২৭ ও ২৯ জুন পৃথক ভাবে নির্দেশিকা জারি করে ফের সরকারি স্কুলশিক্ষকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাক কর্মী সমিতি স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত টিউশন যাঁরা করাচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাছাই করে যাঁরা বিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদেরই টার্গেট করে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। বিচারের ক্ষেত্রে মানদণ্ড সব সময় এক হওয়া উটিত।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষক তৃণমূল সংগঠন। তাঁদের তরফে সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওদের সংগঠনে লোক নেই। তাই এ সব কথা বলছে। কেন শিক্ষকরা টিউশন করবেন? এ জিনিস চলতে পারে না। সরকারি সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভাবে সমর্থন করছি।’’