কৃষকদের জন্য প্রাপ্য অর্থের দাবি জানানোর আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাজ্য কৃষি দফতর।
বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে রাজ্যের কৃষকদের কিষান নিধি সম্মান প্রকল্পে প্রাপ্য অর্থ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বস্তুত, সেটি তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যেই ছিল। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের কৃষকদের জন্য তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি। মুখ্যমন্ত্রীর পর এবার প্রধানমন্ত্রী কিষাননিধি সম্মান প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের জন্য প্রাপ্য অর্থের দাবি জানানোর আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাজ্য কৃষি দফতর। নির্বাচনী জনসমাবেশে এসে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রতি বছর ছ’হাজার টাকা হিসেবে তিন বছরের মোট ১৮ হাজার টাকা পাবেন বাংলার কৃষকরা। এবার সেই প্রতিশ্রুতিরই বাস্তবায়ন চাইছে রাজ্য সরকার।
কৃষি দফতরের আধিকারিকরা প্রাথমিক ভাবে একটি তালিকাও প্রস্তুত করেছেন। সূত্রের খবর, সেই তালিকায় এখনও সব কৃষকের নাম নথিভুক্ত হয়নি। তাই এই প্রকল্পের আওতায় কোনও কৃষক যাতে বাদ না পড়ে যান, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে দফতর। কিষান নিধি প্রকল্পে অর্থ পাওয়ার যে প্রক্রিয়া রয়েছে, সেই কাজ ত্বরাণ্বিত করার পাশাপাশি কৃষকদের তালিকাও তৈরি করছে তারা। মন্ত্রিসভার দফতর বন্টনে কৃষি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে দিলেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একবার কথা বলে নিতে চান। কারণ, ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী পদে তৃতীয়বারের জন্য শপথ নিয়ে মমতা নিজেই কিষান নিধি সম্মান প্রকল্পের অর্থ কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা তালিকা তৈরির পাশাপাশি সরাসরি কৃষকরা যাতে এই অর্থ পেয়ে যান, সেই প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের এ বিষয়ে চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত দিলেই আমরা কাজে আরও গতি এনে তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তা পাঠিয়ে দেব।’’
বিধানসভা ভোটে মমতার ওপর ‘চাপ’ তৈরি করতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী নির্বাচনী জনসভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপি-র সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই কৃষকরা কিষান নিধি সম্মান প্রকল্পে ১৮ হাজার টাকা করে পাবেন। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, মমতার সরকারের ‘একরোখা’ মনোভাবের কারণেই ওই অর্থ রাজ্যের কৃষকদের দিতে পারেনি কেন্দ্র। এবার ‘পাল্টা চাল’ দিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের কৃষকদের জন্য বরাদ্দ ওই অর্থের দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।