পঞ্চায়েত ভোটে সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্বাচনের কাজে নিয়োগ করা হবে। ফাইল চিত্র।
আগামী মে মাসেই পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। তাই রাজ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীন সমস্ত স্কুলের পরিচালন সমিতি-সহ অ্যাডহক কমিটি, সাংগঠনিক কমিটি এবং প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই সমস্ত কমিটির মেয়াদ ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
তবে এই প্রথম নয় যে, পরিচালন সমিতির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময়ও স্কুল পরিচালন সমিতি-সহ যাবতীয় কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের জেরে স্কুল প্রশাসনের ভোট করানো যায়নি। আর ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের কারণে এই নির্বাচন আবারও স্থগিত করে দেওয়া হয়। ২০২২ সালেও স্কুলের পরিচালন সমিতির ভোট না করিয়ে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। আর এ বছর পঞ্চায়েত ভোটের কারণে স্কুলের পরিচালন সমিতি-সহ অ্যাডহক কমিটি, সাংগঠনিক কমিটি ও প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বার বেশির ভাগ স্কুলের পরিচালন বা অন্যান্য সমিতির নির্বাচন মে মাসে হবে বলে স্থির করে ছিল প্রশাসন। কিন্তু ওই সময়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট চলবে। পঞ্চায়েত ভোটে সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্বাচনের কাজে নিয়োগ করা হবে। স্কুলগুলিকেও বহু ক্ষেত্রে ভোটের জন্য ব্যবহার করা হবে। এই ব্যস্ততার মধ্যে কোনও ভাবেই স্কুলের পরিচালন সমিতি বা অন্য যে কোনও ধরনের নির্বাচন সম্ভব হবে না। নির্বাচন না হলে স্কুলগুলির পরিচালন সমিতি আর কোনও কাজ করতে পারবে না। ফলে স্কুলের প্রশাসন অকেজ হয়ে পড়তে পারে। তাই বিকল্প পথ হিসাবে এই কমিটিগুলির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল। ভোটপর্ব মিটে গেলেই এই নির্বাচন হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
বঙ্গীয় শিক্ষা ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত স্কুল পরিচালন সমিতিগুলির কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি করে দেওয়া হচ্ছে। কখনও লোকসভা ভোটের নামে, কখনও করোনা সংক্রমণের নামে। কখনও আবার বিধানসভা ভোটের নামে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের নামে করা হল। আমাদের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে যদি স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়, তা হলে শাসকদলের বহু জায়গায় পরাজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই কায়দায় সমিতির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’’ তবে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি আবার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, যে কোনও কারণেই হোক স্কুলের প্রশাসনকে সচল রাখতে হবে। কেবলমাত্র দলীয় সঙ্কীর্ণ রাজনীতি দেখলে চলবে না। পরিচালন সমিতির মেয়াদ বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা যুক্তিযুক্ত।