একঝাঁক বিশিষ্ট বাঙালি আছেন মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটিতে।
সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঙালিকে গোটা বছর ধরে স্মরণের কর্মসূচি। আর সেই উপলক্ষে বর্তমান সময়ের সেরা বাঙালিদের সমাহার যেন গোটা জ্যোতিষ্কমণ্ডলী। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী এক বছর ধরে পালনের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা কর্মসূচি সরাসরি দেখভাল করতে চান বলে কমিটির চেয়ারপার্সন হলেন নিজেই। তবে অমর্ত্য সেন থেকে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ থেকে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়— একঝাঁক বিশিষ্ট বাঙালি সাগ্রহে শামিল হলেন মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সেই কমিটিতে।
২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। সেই উপলক্ষে বর্ষব্যাপী উদ্যাপন কর্মসূচি তৈরি করছে রাজ্য। ২০২১-এর ২৩ জানুয়ারি থেকেই সে উদ্যাপন শুরু হবে। আর শেষ হবে ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে পৌঁছে। রাজ্য স্তরে শুধু নয়, একেবারে আঞ্চলিক স্তর পর্যন্তও উৎসব-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এক বছর ধরে নেতাজি স্মরণ চলুক, মুখ্যমন্ত্রী তেমনই চান। সেই লক্ষ্যেই প্রায় গোটা সুশীল সমাজকে শামিল করে বিশেষ কমিটি গঠন। নেতাজি স্মরণে কী ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হবে, কোন ধরনের অনুষ্ঠান হবে, বিশেষ আয়োজন কী রকম হওয়া উচিত, এই কমিটি সে সবই স্থির করবে।
নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীকে নানা ভাবে স্মরণীয় করে রাখতে বেশ কিছু দিন ধরেই তৎপর হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। গত সপ্তাহে তিনিই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন ২৩ জানুয়ারিকে ‘জাতীয় ছুটি’র দিন ঘোষণা করতে। নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আসার আগেই এই ঘোষণা হয়ে যাওয়া উচিত বলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন। কেন্দ্র সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। কিন্তু মমতা থেমে থাকেননি। তিনি এক বছর ধরে নেতাজি স্মরণের পরিকল্পনা তৈরি শুরু করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সমস্ত পরিবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায়, বিরাট ঘোষণা মমতার
আরও পড়ুন: বঙ্গে ভোটের পালে ‘হিন্দুত্ব হাওয়া’ টানতে অভিযান করবে হিন্দু পরিষদ
মুখ্যমন্ত্রীর তৈরির করা কমিটিতে দুই নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন এবং অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় তো শামিল হচ্ছেনই, কবি শঙ্খ ঘোষ, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, চিত্রী যোগেন চৌধুরী ও শুভাপ্রসন্নও থাকছেন। থাকছেন জয় গোস্বামী, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, সুবোধ সরকাররাও। এ ছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ আমলা থাকছেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ দিন নাম না করে বিজেপি তথা কেন্দ্রকে খোঁচাও দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ‘‘এখন তো আবার দেখছি ইতিহাস বদলে দেওয়ার একটা প্রবণতা। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা ভুলিয়ে দিয়ে তাঁদের সামনে তুলে আনার চেষ্টা হচ্ছে, যাঁরা স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন।’’ পশ্চিমবঙ্গে সেই ‘ইতিহাস বদল’ হতে তিনি হতে দেননি বলেও মমতা এ দিন দাবি করেছেন।