কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
খুনের মামলায় দ্রুত বিচার শেষের জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাই কোর্ট। তার পরেও কলকাতার নগর দায়রা আদালতে সেই বিচার আটকে আছে। ওই মামলায় অভিযুক্তের জামিনের শুনানিতে এ কথা জানতে পেরে মঙ্গলবার রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। তিনি জানিয়েছেন, নিম্ন আদালতে বিচার বাধা পেলে খোদ হাই কোর্ট সেই বিচারের দায়িত্ব নেবে।
আদালতের খবর, এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে কলকাতার নগর দায়রা এবং ব্যাঙ্কশাল কোর্টের আইনজীবী সংগঠনের। তাঁদের আন্দোলনের বাধাতেই ওই মামলার সাক্ষ্যদান এবং বিচার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক তাঁর রিপোর্টে হাই কোর্টকে জানিয়েছেন। নিম্ন আদালতে সমস্যা থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নিতেও বার অ্যাসোসিয়েশনকে বলেছেন বিচারপতি বাগচী।
আইনজীবীদের এমন কাজ কাম্য নয় জানিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, নিম্ন আদালতের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সংগঠনের সভাপতি এবং সম্পাদকেরা নির্দেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন এবং কোর্টের কাজে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ছাড়াও, নিজেদের ক্ষোভ এবং দাবিদাওয়া মুখ্য বিচারকের মাধ্যমে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠাবেন। রেজিস্ট্রার জেনারেলের উপস্থিতিতে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা হবে।
নির্দেশের প্রতিলিপিতে ডিভিশন বেঞ্চ লিখেছে, হাই কোর্ট আশা করে যে এই সমস্যা মিটে যাবে এবং বিচার বিভাগকে লজ্জিত হয়ে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে হবে না। আগামী ২৯ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিন ফের কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক এবং হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯-এর ৭ অক্টোবর তমলুকে তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের মামলায় আনিসুর রহমান-সহ আট জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০২১ বিধনসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য কুরবান হত্যা মামলা প্রত্যাহার করতে চায়। রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নিহতের দাদা আফজল শা। হাই কোর্ট রাজ্যের সিদ্ধান্তকে খারিজ করে। তমলুক আদালতে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলছিল। পরে হাই কোর্টের নজরদারিতে কলকাতা নগর ও দায়রা আদালতে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।