প্রতিকী চিত্র।
অটিস্টিক সন্তানের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। বার করে দেওয়া হয়েছে আশ্রয়স্থল থেকে। বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও সুরাহা হয়নি। অবশেষে অসুস্থ সন্তানের প্রতি সুবিচার পেতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বাবা। বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে রাজ্যকে। এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
পেশায় শিক্ষক অরূপকুমার দাস। ২০০৩ সালে তাঁর সন্তান ইন্দ্ররূপের জন্ম হয়। অটিস্টিক বলে সে কথা বলতে পারে না। অরূপকে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন, এই ধরনের সমস্যা রয়েছে এমন অনেকের মধ্যে সন্তানকে রাখতে। সেই মতো ২০১১ সালে দুর্গাপুরের একটি হোমে সন্তানকে পাঠান তিনি। অরূপের কথায়, ‘‘প্রথম প্রথম ভালই ছিল ছেলে। ২০১৬ সালে ওই হোমে নতুন সম্পাদক হিসাবে আসেন পাপিয়া মুখোপাধ্যায়। তাঁর আমলে শিশুদের উপর অত্যাচারের বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে।’’
অরূপের দাবি, ‘‘২০১৮ সালের ২৩ মার্চ আমার ছেলেকে বিশেষ ভাবে অক্ষম অন্য এক জন কামড়ে দেয়। প্রথমে আমরা গুরুত্ব দিইনি। পরে গিয়ে দেখি গোটা শরীরে কামড়ানোর দাগ। অথচ হোম কোনও চিকিৎসা করায়নি। আমরা জানতে পারি, ওই দুই শিশুকে একটি খাঁচায় রাখা হয়েছিল। তার ফলেই ওই অবস্থা হয়। কিন্তু খাঁচায় রাখা হয়েছিল কেন সেই উত্তর পাওয়া যায়নি।’’ এর পর তাঁর ছেলে আরও কয়েক বার আঘাত পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন অরূপ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হোমের হেফাজতে কোনও শিশু থাকা অবস্থায় সেখানে কিছু ঘটলে তার দায় তো তাদেরই নেওয়া উচিত। আমরা বিষয়টি বলার পরও কোনও কাজ হয়নি।’’
অরূপ জানান, হোমের এই ধরনের আচরণ নিয়ে তিনি চাইল্ড কমিশন, পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক, রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লেখেন। কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। অগত্যা উপায় না দেখে আদালতে এসেছেন তিনি।
গত বছর হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন অরূপ। আদালতে তাঁর আবেদন, সন্তানের দেখভালের সঠিক দায়িত্ব পালন করেনি ওই হোমের সম্পাদক। তাঁর গাফিলতিতেই ওই হোম থেকে সন্তানকে বার করতে বাধ্য হয়েছেন। এই সব শিশুদের জন্য নতুন নতুন পরিবেশ একদম উপযুক্ত নয়। বুধবার ওই ঘটনায় আদালত এফআইআর-এর নির্দেশ দেয়।