কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
আইআইটি-র ছাত্র ফয়জ়ান আহমেদের মৃত্যুর মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) রিপোর্ট দেখে বিস্ময় প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট।
সোমবার সিট-এর তরফে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ওই রিপোর্ট জমা পড়ে। তা দেখে বিচারপতি বলেন, ‘‘রিপোর্ট দেখে খুব বিস্মিত হয়েছি। ছাত্রদের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিতীয় ময়না তদন্তের কোনও মিল বা সূত্র নেই। তাঁরা যা বলেছেন, তার সঙ্গে মূল ঘটনার সরাসরি যোগও কিছু ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে না।” এ দিন তাঁর নির্দেশ, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন সিট নতুন ভাবে রিপোর্ট দেবে। এর মধ্যে চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি ফয়জ়ানের মোবাইল পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে। কলকাতার কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টও দেবে।
এ দিন সিট-এর কৌঁসুলি তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি জানান, মৃত ছাত্রের মোবাইলের হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাট পরীক্ষা প্রয়োজন। তাই ফোনটি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা কলকাতার ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। এই বক্তব্য শুনে বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আইআইটির যাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে, সেখানে মূল ঘটনা নিয়ে তো কিছুই নেই। তা হলে?’’ সম্প্রতি সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক জন ছাত্র ঠিক বলছেন কি না, তা জানতে পলিগ্রাফ পরীক্ষার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
সিট-এর কৌঁসুলি জানান, ফয়জ়ান অনলাইনে রাসায়নিকের দু‘টি ‘কনটেনার’ কিনেছিলেন বলে এক ছাত্র জানিয়েছেন। সে সময় ফয়জ়ানের পরিবারের কৌঁসুলিরা জানান, যে ছাত্র এই বয়ান দিয়েছেন তিনি ঘটনার সময় হাসপাতালে ছিলেন। ২০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও এক মাত্র ওই ছাত্রই এ কথা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবরে আইআইটি-র হস্টেল থেকে তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ফয়জ়ানের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রথমে পুলিশ এবং আইআইটি বিষয়টি ‘আত্মহত্যা’ বলে চালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ফয়জ়ানের পরিবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় এবং আদালতের নির্দেশে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ দিয়ে দ্বিতীয় বার ময়না তদন্তের পরে ফয়জ়ানকে খুন করা হয়েছে বলে জানা যায়। তার পরেই আদালত রাজ্যের পুলিশ অফিসার কারিয়াপ্পা জয়রামনের নেতৃত্বে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেয়।