পুড়ে যাওয়া ঘর। নিজস্ব চিত্র
রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এ রাজ্যের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, অর্জুন সিংহ এবং রাজু বিস্তা। রাজ্যে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁরা অমিতের কাছে দরবার করেন। পরে সুকান্ত জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের কাছে এই ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে।
মঙ্গলবার একই দাবিতে মিছিল করে রাজভবনে যায় বিজেপি-র পরিষদীয় দল। রাজভবনে না থাকায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হয়নি বিজেপি বিধায়কদের। তবে ভাচুর্য়ালি কথা হয়েছে। সেখানে তাঁরা রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানান কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের। তাঁরা একটি প্রতিবাদপত্র দিয়েছেন।
রামপুরহাটের ঘটনার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে অরাজকতার শাসন চলছে। মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পুলিশমন্ত্রীও বটে, বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকলে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।’’ ওই মন্তব্যের পরেই তিনি রাজ্য রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘আমার বার বার মনে হচ্ছে, এই রাজ্য ধীরে ধীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগোচ্ছে।’’
টুইটেও কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর টুইটে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, তাঁর দফতর ও রাজ্যপালকে ট্যাগ করেন।
এর আগে ঝালদায় কংগ্রেস এবং পানিহাটিতে তৃণমূল কাউন্সিলর খুনের ঘটনার পরেই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে ভয়ঙ্কর অবস্থা। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কোনও নিরাপত্তা নেই। কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর কোনও উপায় নেই।’’
গত শনিবার রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের গাড়িতে হামলা চালানো হয় তখনও রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেন সুকান্ত মজুমদার।
মঙ্গলবার রাজভবন চত্বরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যপালকে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয় হলেও কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে।’’ বিরোধী দলনেতার ব্যাখ্যা, ‘‘মহিলা, শিশু, তফসিলি জাতি-উপজাতি বা সংখ্যলঘুর উপর হামলা হলে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, বগটুই গ্রামটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বলেই জানা গিয়েছে।
বিধানসভা ভোট মেটার পর থেকে রাজনৈতিক খুনের হিসাব দেখিয়ে বার বার কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ, প্রকারান্তরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলছিল বিজেপি। সেই দাবিতে নয়া ‘হাতিয়ার’ রামপুরহাট-কাণ্ড।