BJP

লক্ষ্যপূরণ না হলেও ফলাফলে ‘রসদ’ পাচ্ছে পদ্ম

ফলের প্রাথমিক বিশ্লেষণে বিজেপি দেখছে, রাজ্যে তাদের জন্য কিছু আশাব্যঞ্জক উপাদানও আছে। যেমন, গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় রাজ্যে বিজেপির ভোট শতাংশ সামান্য হলেও বেড়েছে।

Advertisement

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ০৭:০৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বিজেপির। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘোষিত লক্ষ্য ৩০-এর ধারেকাছে পৌঁছনো তো যায়ইনি, উল্টে গত বারের চেয়ে বাংলায় ৬টি আসন কম পেয়েছে তারা। তবে এই ধাক্কার মধ্যেও ফল বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু ‘ইতিবাচক’ দিক খুঁজে পাচ্ছে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

ফলের প্রাথমিক বিশ্লেষণে বিজেপি দেখছে, রাজ্যে তাদের জন্য কিছু আশাব্যঞ্জক উপাদানও আছে। যেমন, গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় রাজ্যে বিজেপির ভোট শতাংশ সামান্য হলেও বেড়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৭৭টি আসন জিতেছিল বিজেপি। লোকসভার ফলের নিরিখে তারা এখন ৯০টি বিধানসভায় এগিয়ে গিয়েছে। ১৯টি এমন বিধানসভায় ‘লিড’ এসেছে, যেখানে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এগিয়ে থাকলেও দল হেরে গিয়েছিল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গের ৬টি বিধানসভা আসন। জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি, কালিম্পং, করণদিঘি, হেমতাবাদ, বৈষ্ণবনগর ও মানিকচক আসন তারা লোকসভা ভোটের নিরিখে কার্যত ‘পুনরুদ্ধার’ করেছে। এ ছাড়া, দক্ষিণবঙ্গের কৃষ্ণনগর দক্ষিণ, তেহট্ট, হাবড়া, বিধাননগর, জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, চুঁচুড়া, বলাগড়, সপ্তগ্রামের মতো বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে।

বিজেপির সব চেয়ে বড় সাফল্য বিরোধী দলনেতার জেলায়। এই লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে সেখানে বিজেপি এমন ৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে, যা বঙ্গ বিজেপির ইতিহাসে প্রথম বার। তার মধ্যে শুভেন্দুর পূর্ব মেদিনীপুরে ৬টি। তমলুক, পাঁশকুড়া পূর্ব, মহিষাদল, চণ্ডীপুর, নন্দকুমার ও রামনগর আসনে বিজেপি প্রথম বারের জন্য এগিয়ে আছে। মুর্শিদাবাদের বড়ঞা, জঙ্গিপুর ও উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতেও এগোতে পেরেছে বিজেপি।

Advertisement

বড়ঞা, জঙ্গিপুর, তেহট্টের মতো সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত আসনে এগিয়ে থাকা বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে পদ্ম-শিবিরকে। কলকাতা উত্তর, যাদবপুরের মতো তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে ভোট বাড়িয়েছে তারা। দলের রাজ্যসভা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের মতে, “সার্বিক ভাবে আমরা ভাল ফল করেছি। পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যে ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে, আমরা সেটা ঠেকাতে পারিনি।”

শহরাঞ্চলে ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলেও আপাত স্বস্তি বিজেপি শিবিরে। কলকাতা পুরসভার ৫১টি ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি রাজ্যের সিংহভাগ পুরসভায় তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। উত্তরের শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, ইংরেজবাজার থেকে শুরু করে দক্ষিণের বাঁশবেড়িয়া, গোবরডাঙা, কালনা, কাটোয়া, দাঁইহাটের মতো পুরসভায় এগিয়ে রয়েছে তারা। যদিও তৃণমূলের তরফে এর ভিন্ন ব্যাখ্যা মিলছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “এখন রাজ্যের পুর এলাকাগুলিতে অবাঙালি মানুষের বসবাস বেশি। তাঁরা মনে করেন, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে ‘নিফটি’ উপরে যাবে। তাঁরা তাঁদের ট্রেডিংয়ের স্বার্থে বিজেপিকে ভোট দেন। আমরা তাঁদের কাছে যাব, চেষ্টা করব আরও ভাল করে বোঝাতে।’’ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের ব্যাখ্যা, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে কিছু সমীকরণ ছিল। কিন্তু বিধানসভা ও পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল এই এলাকাগুলিতেই আবার ব্যাপক সাফল্য পাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement