প্রণাম-এর সদস্যবৃন্দ
১৯ অগস্ট কলা মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘ল্যাম্প অফ গড’। প্রণাম-এর সহযোগিতায়, নাচ ও সঙ্গীতের মিলিত এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করে দ্য বেঙ্গল। অনুষ্ঠানে অংশ নেন নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর নৃত্য গোষ্ঠী দীক্ষা মঞ্জরী এবং আনন্দ গুপ্ত ও যুক্তরাজ্যে অবস্থিত তাঁর সঙ্গীতের স্কুল দক্ষিণায়ন ইউকে।
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্য গোষ্ঠী দীক্ষা মঞ্জরী
প্রণাম-এর সদস্যদের জন্য, উভয় প্রান্তের শিল্পীরা একত্রে পরিবেশন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শ্রী অরবিন্দ’র ওপর একটি আলেখ্য। কলা মন্দিরে উপস্থিত থেকে সেই সন্ধ্যাটি উপভোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন।
আনন্দ গুপ্ত ও তাঁর সঙ্গীতের স্কুল দক্ষিণায়ন ইউকে
দ্য বেঙ্গল হল কলকাতায় অবস্থিত একটি অসরকারি সংস্থা। নামকরা নাগরিক, চিন্তাবিদ ও সফল ব্যক্তিদের নিয়ে এই সংস্থা রাজ্যে নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও কল্যাণমূলক কাজ সংগঠিত করে থাকে। কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় প্রণাম প্রকল্পটি চালায় দ্য বেঙ্গল। বয়স্ক নাগরিকদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই এর উদ্দেশ্য। বর্তমানে কুড়ি হাজারেরও বেশি সিনিয়র সিটিজেন এই প্রকল্পের সদস্য। শ্রী সিমেন্ট তাদের সিএসআর বা কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার অধীনে প্রণাম’কে সাহায্য করে থাকে।
দ্য বেঙ্গেল-এর কার্যকরী সভাপতি গৌতম ঘোষের স্বাগত ভাষণের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শ্রী ঘোষ বলেন, “এই উদ্যোগে সামিল হওয়ার জন্য আমি প্রণামের সব সদস্যদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেই সঙ্গে, এই উদ্যোগকে প্রসারিত করতে স্বেচ্ছাসেবীরা যে কাজ করে চলেছেন, তার জন্য তাঁদেরও আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। চোদ্দ বছর আগে দ্য বেঙ্গল তার যাত্রা শুরু করে। শ্রী সিমেন্ট সব সময় আমাদের পাশে থাকায়, এই যাত্রা বেশ ফলপ্রসু হয়েছে। দ্য বেঙ্গল-এর প্রধান শক্তি হল আমাদের বহুমুখী ও সমন্বয়ী সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও তার প্রসার ঘটানো। এবং একই সঙ্গে তার এক গুচ্ছ সামাজিক উদ্যোগ, যেগুলি আমরা বাস্তবায়িত করতে পেরেছি। প্রণাম কলকাতা পুলিশের সমর্থিত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আমরা আশা রাখি, আমাদের স্বেচ্ছাসেবীদের সাহায্যে আগামী দিনে আমরা প্রণাম’কে আরও অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে পারব।”
দ্য বেঙ্গল-এর প্রোগ্রাম কমিটির সদস্য অরিন্দম শীল আমাদের সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও ভাষার শুদ্ধতার ওপর জোর দেন। এই কাজে, আমাদের সমাজের বয়স্ক নাগরিকরা তাঁদের হৃদয়ের তারুণ্য এবং জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার উজাড় করে দিয়ে আলোক বর্তিকার ভূমিকা পালন করেন বলে অভিমত প্রকাশ করেন শ্রী শীল।
গৌতম ঘোষ ও অরিন্দম শীল
অনুষ্ঠানটি তিন ভাগে ভাগ করা হয়: স্বাধীনতা দিবস ও শহিদ স্মরণ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর স্বদেশ চেতনা; শ্রী অরবিন্দ’র ১৫০তম জন্মবার্ষিকী এবং রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর লেখার সমন্বয়; এবং শেষে মৃত্যুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কাব্যিক সম্পর্ক ও বোঝাপড়া। গুপ্ত ও তাঁর দল এই তিনটি ক্ষেত্রেই গান ও স্বগতঃ উক্তি পরিবেশন করেন। এবং তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দীক্ষা মঞ্জরী উপস্থাপন করেন অসামান্য নৃত্য । অনুষ্ঠানটি একটি নির্দিষ্ট কাঠামো মেনে চলে। যার মধ্যে, নাচের মাধ্যমে কবির কবিতা ও কথার মর্ম ফুটিয়ে তোলা হয়। বিপুল জ্ঞানের অধিকারী এই দু’জনকেই যথাযথ মর্যাদা প্রদান করে অনুষ্ঠানটি।
সন্দীপ ভুতোরিয়া
দ্য বেঙ্গল-এর সেক্রেটারি জেনারেল সন্দীপ ভুতোরিয়া বলেন, “দু’শো সদস্য থেকে বর্তমানে প্রণাম-এর কুড়ি হাজার সদস্য সংখ্যায় পৌঁছনোর যাত্রাটা খুবই হৃদয়গ্রাহী হয়েছে। বর্ষীয়ান সমাজের জন্য এই ধরনের কাজ করা ও সাহায্য যোগানো আমাদের মানসিক পূর্ণতা এনে দিয়েছে। আমরা আমাদের যাত্রার দশ বছর উদযাপন করছি। অবশ্যই স্বীকার করতে হয় যে, কলকাতা পুলিশ ও দ্য বেঙ্গল-এ আমার সহকর্মীদের অবিচল অংশীদারিত্ব ছাড়া আমরা এই সাফল্য অর্জন করতে পারতাম না। প্রণাম অফিসের সহযোগী কর্মীদের আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁরা অবিরাম কাজ করে এই প্রকল্পকে সফল করে তুলেছেন।”