Jammu-Kashmir Terror Attack

ইউরোপ যাওয়ার ভিসা না পেয়ে কাশ্মীর, বিয়ের ৭ দিনের মাথায় মৃত্যু নৌসেনা লেফটেন্যান্টের! মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে বিধবা হিমাংশী

আগামী ২৭ মে বিনয়ের জন্মদিন। ছেলে মধুচন্দ্রিমা থেকে ফিরে এলে বড় করে জন্মদিন পালনের পরিকল্পনা করেছিল পরিবার। কারণ, তার পরেই ছুটি শেষ হবে। আবার কাজে চলে যাবেন। মঙ্গলবার এল তাঁর মৃত্যুসংবাদ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩৪
Share:
(বাঁ দিকে) স্বামীকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ সদ্যবিবাহিতা হিমাংশী নরওয়াল। নৌসেনার লেফটেন্যান্ট বিনয় নরওয়াল (ডান দিকে) ।

(বাঁ দিকে) স্বামীকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ সদ্যবিবাহিতা হিমাংশী নরওয়াল। নৌসেনার লেফটেন্যান্ট বিনয় নরওয়াল (ডান দিকে) । ছবি: সংগৃহীত।

বিয়ে উপলক্ষে মাসখানেকের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন নৌসেনার লেফটেন্যান্ট বিনয় নরওয়াল। দিন সাতেক আগে ২৬ বছরের বিনয়ের সঙ্গে ২৪ বছরের হিমাংশী নরওয়ালের বিয়ে হয়। মধুচন্দ্রিমায় তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল ইউরোপ। কিন্তু ভিসার জটিলতায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তাই ভূস্বর্গ কাশ্মীরে গিয়েছিলেন নবদম্পতি। মঙ্গলবার অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় প্রাণ হারালেন নৌসেনা লেফটেন্যান্ট। মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে বিধবা হলেন গুরুগ্রামের মেয়ে হিমাংশী।

Advertisement

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিনয়ের হত্যার খবর পায় পরিবার। আকাশ ভেঙে পড়ে দুই পরিবারের মাথায়। ভয়ঙ্কর ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন হিমাংশী। তাঁর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল সমাজমাধ্যমে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। হিমাংশী বলেন, ‘‘আমরা দু’জন ভেলপুরি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ এক জন এসেই বলল, ‘ও মুসলমান নয়, গুলি কর।’’’ সঙ্গে সঙ্গে গুলি চলে নৌসেনার লেফটেন্যান্টের উপর। তবে ছেড়ে দেওয়া হয় হিমাংশীকে।

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বছর তিনেক আগে নৌসেনায় যোগ দেন বিনয়। কেরলের কোচিতে কর্মরত ছিলেন তিনি। বাবা রাজেশ শুল্ক দফতরে কর্মরত। এখন পানিপথে কর্মরত। দাদু প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক। মা আশা দেবী বাড়ি সামলান। বিনয়ের বোন, সৃষ্টি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেই সূত্রে এখন দিল্লিতে থাকেন। হিমাংশীর বাড়ি গুরুগ্রামে। তিনি পিএইচডি করছেন। বাবা সুনীল কুমার কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক।

Advertisement

গুরুগ্রামে মাস দুয়েক আগে বাগ্‌দান হয়েছিল বিনয়-হিমাংশীর। বিয়ে হয়েছে গত ১৬ এপ্রিল। ১৯ এপ্রিল প্রীতিভোজের আয়োজন করেছিলেন দম্পতি। বিনয়ের পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘ওরা মধুচন্দ্রিমায় ইউরোপ যাবে বলে কথা ছিল। কিন্তু ভিসা নিয়ে সমস্যা হয়। তাই জম্মু-কাশ্মীর গিয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘’২১ এপ্রিল ওরা পহেলগাঁওয়ের একটি হোটেলে উঠেছিল। খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুরতে বেরিয়েছিল বৈসরন উপত্যকায়। সেখানেই জঙ্গির গুলিতে আমাদের বিনয় মারা গিয়েছে।’’

আগামী ২৭ মে বিনয়ের জন্মদিন। ছেলে মধুচন্দ্রিমা থেকে ফিরে এলে বড় করে জন্মদিন পালনের পরিকল্পনা করেছিল পরিবার। কারণ, তার পরেই ছুটি শেষ হবে। আবার কাজে চলে যেতে হবে। জীবন্ত অবস্থায় আর বাড়ি ফেরা হল না বিনয়ের। তাঁর দেহ আনতে বুধবার রওনা দিয়েছে পরিবার। সদ্যবিবাহিত দুই যুবক-যুবতীর পরিবারে শুধু বিলাপ আর হা-হুতাশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement