কুন্তলের আইনজীবী রাজা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, কুন্তলের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের মামলা করা যায় না। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
শিক্ষকের চাকরি দেবেন বলে টাকা নিয়েছেন, আবার মামলা করে সেই চাকরি বাঁচানোর জন্যও টাকা নিয়েছেন— শাসকদল তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনল ইডি। শুক্রবার আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর স্কুলের চাকরির পরীক্ষার্থীদের হয়ে মামলা রুজু করার জন্যও প্রায় আড়াই কোটি টাকা তুলেছিলেন কুন্তল।
ইডির অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তবে মামলা লড়ার জন্য এই টাকা গত এক বছরেই তুলেছেন কুন্তল। কারণ নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে এক বছরেই। ইডি আদালতকে এ-ও জানিয়েছে যে, অন্তত ১২০০ প্রার্থী কুন্তলের শরণাপন্ন হয়েছিলেন নিজেদের চাকরি বাঁচানোর জন্য।
শুক্রবার নগর দায়রা আদালতে কুন্তলের বিরুদ্ধে পাওয়া তথ্যপ্রমাণ আদালতের সামনে পেশ করে ইডি। কুন্তল জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। কুন্তলকে কেন জামিন দেওয়া যাবে না, তা জানিয়ে কয়েক দফা কারণ জানায় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা আদালতকে লিখিত ভাবে জানায়, কুন্তল যেমন চাকরি দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। চাকরি বাঁচানোর মামলার জন্যও টাকা নিয়েছেন একই ভাবে।
ইডির দাবি, নবম-দশম শ্রেণি এবং উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের জন্য প্রতি চাকরিপ্রার্থীর থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন কুন্তল। সব চাকরির ‘রেট’ সমান ছিল না। স্কুলে বিভিন্ন চাকরির ধরন অনুযায়ী নির্ধারিত হত বিনিময়মূল্য। তবে কুন্তল শুধু চাকরি দিয়েই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলেননি। ইডি যে দাবি করেছে, তা সত্যি হলে নিয়োগ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর চাকরি প্রার্থীদের হয়ে মামলা রুজু করার জন্যও টাকা নিয়েছিলেন কুন্তল।
প্রায় ১২০০ স্কুলের চাকরিপ্রার্থীর থেকে মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন কুন্তল তাঁদের মামলা লড়ার জন্য। সব মিলিয়ে সেখান থেকেই ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা আসে তাঁর হাতে।
যদিও ইডির এই দাবির জবাবে, শুক্রবার কুন্তলের আইনজীবী রাজা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, কোনও টাকাই কুন্তলের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তাই শুধু ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কুন্তলের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের মামলা করা যায় না। রাজার বক্তব্য, যে হেতু কুন্তলের কাছে কোনও অর্থ পাওয়া যায়নি, তাই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি কোনও মামলাই দায়ের করতে পারে না।