বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকেই দায়ী করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
টেট পরীক্ষার্থী তাঁর পরীক্ষার রেজাল্ট জানতে পারেননি আট বছর। ফলে বসতে পারেননি পর পর দু’টি টেট পরীক্ষায়। পরীক্ষার্থীদের কেরিয়ার নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকেই দায়ী করল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মর্মে মানিককে দু’লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন। একই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন, মানিককে ওই অর্থ দিতে হবে ১৫ দিনের মধ্যেই।
নিয়োগ মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই মানিককে দু’লক্ষ টাকার জরিমানা করে হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরীক্ষা দিয়ে ফল জানার অধিকার প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর রয়েছে। কিন্তু পর্ষদের শীর্ষ পদে এমন এক ব্যক্তি ছিলেন বলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এক টেট পরীক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতেই এই অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাই কোর্ট। ওই পরীক্ষার্থীর নাম মালারানি পাল। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় অংশ নেন মালারানি। কিন্তু পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন কি না, পর্ষদ তাঁকে জানায়নি বলে অভিযোগ। মামলকারীর বক্তব্য, টেটের ফল জানতে না পারায় ২০১৬ এবং ২০২০ সালের দু’টি পরীক্ষাতেও বসতে পারেননি তিনি। ফলে বঞ্চিত হয়েছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই পরীক্ষার্থীর হয়ে মামলা করেছিলেন আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। সেই আবেদনের শুনানিতেই তৃণমূলের বিধায়ক মানিককে জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
মামলাকারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, গত বছর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে পর্ষদ সব পরীক্ষার্থীর ফল প্রকাশ করলে দেখা যায় মালারানিও পাশ করেছেন। কিন্তু ততদিনে টেটের ফল জানতে একাধিক বার পর্ষদের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই টেট পরীক্ষার্থী। এমনকি, ২০১৬ সালে তথ্য জানার অধিকার আইনেও তিনি নম্বর জানার আবেদন করেন। অথচ তার পরও তিনি টেট উত্তীর্ণ কি না, তা জানানো হয়নি পর্ষদের তরফে। স্বাভাবিক ভাবেই, রেজাল্ট না জানায় টেটের দু'টি নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও অংশ নিতে পারেননি মালারানি। সোমবার মামলাটি শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, মানিক যেহেতু জেলে, তাই সেখানে হাই কোর্টের কপি নিয়ে যাবেন মামলাকারীর আইনজীবী। মানিককে ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ জমা দিতে হবে। আগামী ৩০ জানুয়ারি মামলাটির পরবর্তী শুনানি।