নাম না করে আর্থিক প্রতারণা-কাণ্ডে তাপসকে বিঁধলেন মহুয়া।
আর্থিক হোক বা চাকরি সংক্রান্ত প্রতারণা, অভিযোগ থাকলে সরাসরি তাঁর অফিসে এসে অভিযোগ জানাতে বলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শনিবার আবারও তিনি নেটমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। এ বার আর্থিক এবং চাকরি সংক্রান্ত প্রতারণার সঙ্গে খুব স্পষ্ট ভাবে জুড়ে দিয়েছেন টেট কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গও। মহুয়া নিজে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের সাংসদ। সেই জেলারই দু’টি বিধানসভা এলাকার উল্লেখ করে মহুয়া লিখেছেন, ‘তেহট্ট পলাশিপাড়া এলাকাতে একটি চক্রের অভিযোগ করেছেন অনেকে।’ ওই চক্রটি টেট প্যানেলে নাম নথিভুক্ত করার মতো অন্যায় কাজ করছে বলেও মহুয়ার অভিযোগ। চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়কের। ঘটনাচক্রে, শনিবারই গ্রেফতার হয়েছে ওই বিধায়ক তাপস সাহার আপ্তসহায়ক-সহ তিন জন। মহুয়া যদিও যদিও নিজের করা পোস্টে কারও নাম লেখেননি।
বিভিন্ন প্রতারণা চক্র নিয়ে সচেতন করে ফেসবুক পোস্টে মহুয়া লেখেন, ‘সবাইকে সতর্ক করতে চাই— তেহট্ট পলাশিপাড়া এলাকাতে একটি চক্রের অভিযোগ করেছেন অনেকে। ২০১৪ সালে কোর্টের রায়কে অন্যায় ভাবে ঢাল করে ৬ নম্বর বাড়িয়ে ব্যাক ডেটে টেট প্যানেলে নাম নথিভুক্ত করার চক্র চলছে। আজ নয় তো কাল এই চক্রটিও ফাঁস হবে। জনসাধারণকে আবার সতর্ক করছি, এই সব ফ্রড (প্রতারক) লোকেদের পাল্লায় পড়বেন না। তাদের পেছনে ঘুরবেন না। অভিযোগ থাকলে নির্ভয়ে পুলিশ প্রশাসন ও সাংসদ অফিসে লিখিত ভাবে জানান।’
সম্প্রতি তাপসের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ সামনে এসেছে। বেশ কয়েক জন অভিযোগকারী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি লিখেছেন। যা নিয়ে বেজায় ‘অস্বস্তি’তে দল। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতে তাপসের আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়াল-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, বুধবারই প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, যত বড় রাজনৈতিক নেতাই হন না কেন, দুর্নীতিতে নাম জড়ালে কাউকে রেয়াত করা হবে না। পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, অভিযোগ এলে যে দলের যত বড়ই নেতা হন না কেন, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তার পর মহুয়া ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলছেন যে, দলকে সামনে রেখে কোনও রকমের তোলাবাজি করা যাবে না— চাকরি দেওয়ার নাম করে, টেট প্যানেলে নথিভুক্ত করার নাম করে, সরকারি কাজ করিয়ে দেওয়ার নাম করে কেউ যদি মানুষকে প্রতারণা করে তবে, নির্ভয়ে এখুনি পুলিশ বা আমার অফিসে লিখিত অভিযোগ করুন।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘ভয় পাবেন না। চোর, প্রতারককে ভয় করার কোনও কারণ নেই। যতই প্রভাবশালী হন না কেন, এক দিন না এক দিন ধরা পড়বেনই— তাই দয়া করে এগিয়ে আসুন, চলুন এই চক্রগুলিকে বন্ধ করি।’