শীত থেকে বাঁচতে চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুম। রবিবার কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
বছরের শেষে এসে ফের গা-ঝাড়া দিল শীত। এক লপ্তে কলকাতার তাপমাত্রা নেমে গেল স্বাভাবিকের তিন ডিগ্রি নীচে। গাঙ্গেয় বঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও উত্তুরে হাওয়ার দাপটে হুড়মুড়িয়ে পারদ নেমেছে। পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় বয়েছে শৈত্যপ্রবাহও। বড়দিনে জাঁকিয়ে ঠান্ডা না-পড়ায় অনেকেই মুষড়ে পড়েছিলেন। রবিবার সকালের পরিস্থিতি দেখে হাসি ফুটেছে সেই সব শীতবিলাসীদের মুখে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এ দিন কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম। তবে দমদমে তাপমাত্রা কিছুটা বেশি রেকর্ড হয়েছে। ব্যারাকপুরে রাতের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৮.৮ ডিগ্রিতে। শীতে খেল দেখাচ্ছে পানাগড়। এ দিন সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে রাতের তাপমাত্রা ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-৯ ডিগ্রির কাছেপিঠে রয়েছে। আবহবিদেরা জানান, কলকাতায় ডিসেম্বরের শেষে রাতের তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পৌঁছনো বিরল নয়। গত বছরও ২৮ ডিসেম্বর কলকাতার রাতের তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ছিল। ১৯৬৬ সালে ২২ ডিসেম্বর কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.২ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল। সেটাই আলিপুর হাওয়া অফিসের নথি অনুযায়ী সর্বকালের রেকর্ড। ২০১২-র ২৭ ডিসেম্বর কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছিল।
আবহবিজ্ঞানীদের মতে, উত্তর-পশ্চিম ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়লেই তবে কনকনে শীত উত্তুরে হাওয়ায় ভর করে বঙ্গে এসে পৌঁছয়। তার আগে শীতের দাপট বাড়ে বিহার-ঝাড়খণ্ডেও। বড়দিনের সময় উত্তর-পশ্চিম ভারতে শীতের দাপট কমেছিল। ফের তা বাড়তেই শীতের দাপট বেড়েছে। এ দিন কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে সকাল থেকে ঠান্ডা হাওয়া ও নরম রোদও মিলেছে। ছুটির দিনে অনেকেই সকাল-সকাল রঙিন টুপি, সোয়েটার, মাফলারে সেজে শহরে বেরিয়ে পড়েছেন। ভিড় হয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে এবং রেস্তরাঁগুলিতে। আবহবিজ্ঞানীদের মতে, আজ, সোমবার তাপমাত্রার আর পতন হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে সামান্য তা বাড়তেও পারে। তা সত্ত্বেও শীতের দাপট বজায় থাকবে।