শীতের কামড়। রবিবার ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
দিনে-রাতে এমন হাড়কাঁপানো ঠান্ডা শেষ কবে পড়েছে, মনে করতে পারছেন না উত্তর ভারতের বহু বাসিন্দা। রাতের তাপমাত্রা তো বাড়ছেই না, তার উপরে দিনের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে বহু নীচে রয়েছে। হরিয়ানার হিসারে রাতের তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে! বহু এলাকায় দিনের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে ১০-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে গিয়েছে।
কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গেও শীতের দাপট চলছে। অনেকে বলছেন, রাতে লেপ-কম্বল চাপিয়েও নিস্তার মিলছে না। দিনের বেলাতেও অনেকে টুপি পরে, মাফলার জড়িয়ে রাস্তায় বেরোতে বাধ্য হচ্ছেন।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, আজ, সোমবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। কাল, মঙ্গলবার তাপমাত্রা আরও সামান্য বেড়ে পৌঁছতে পারে ১৪ ডিগ্রির কাছাকাছি। তাতে শীতের অনুভূতি অবশ্য কমবে না। আবহবিদেরা বলছেন, রাতের তাপমাত্রা বাড়লেও মেঘলা আকাশের জন্য দিনের তাপমাত্রা কমবে।
আরও পড়ুন: জমল ডাল লেক, সতর্কতা দিল্লিতে
শনিবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গ শীতের রেকর্ড গড়েছিল। রবিবার সেই রেকর্ড ভাঙেনি। হাওয়া অফিসের খবর, এ দিন কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.২ ডিগ্রি। ব্যারাকপুরে ১০। পানাগড়, কাঁথি, আসানসোল, শ্রীনিকেতনের রাতের তাপমাত্রা ৭-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। উত্তরে শিলিগুড়িতে রাতের তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রিতে নেমেছে, জলপাইগুড়িতে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.৬ ডিগ্রি।
তবে এই ঠান্ডাকে হেলায় হারাবে উত্তর ভারত। আবহবিদেরা বলছেন, জোরালো পশ্চিমি ঝঞ্ঝার দৌলতে কাশ্মীরের পাহাড়ে তুষারপাত হয়েছে। তার উপর দিয়ে আসা হাওয়া কনকনে ঠান্ডা বয়ে আনছে। তাতেই ঠকঠকিয়ে কাঁপছে হরিয়ানা থেকে রাঁচী। হিসারে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ০.২ ডিগ্রি। তবে হাওয়া অফিসের নথি বলছে, গত বছরেই ২৬ ডিসেম্বর সেখানে তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল মাইনাস এক ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
১৯৭৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর মাইনাস দেড় ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল হিসারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দিল্লিতে রাতের তাপমাত্রা সাড়ে তিন ডিগ্রির আশপাশে রয়েছে। তার উপরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ১৩ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগরে দিনের তাপমাত্রা নেমে এসেছে সাড়ে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা স্বাভাবিকের থেকে ১২ ডিগ্রি কম! রাঁচীতে রাতের তাপমাত্রা ছিল সাড়ে পাঁচ ডিগ্রি।
তবে উত্তর ভারত থেকে কনকনে হাওয়া কাল, মঙ্গলবার থেকে বাংলায় ঢুকতে বাধা পাবে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী জোলো হাওয়া) ফের রাজ্যের দিকে বয়ে আসছে। তার সঙ্গে সাগরের জোলো হাওয়ার মিশ্রণে ২-৩ জানুয়ারি বৃষ্টি হতে পারে।