—প্রতীকী চিত্র।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ পেতে অনেক সময়েই গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে জেলা স্তরের কিংবা শহরের হাসপাতালে ছুটতে হত বাসিন্দাদের। কিন্তু তাতে সময় লাগে অনেক। কারও কারও আবার যাতায়াতের খরচ জোগানোর সঙ্গতি নেই। এই পরিস্থিতিতে গ্রামের তৃণমূল স্তরে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে সম্প্রতি ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ অগস্ট চালু হওয়ার পর থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের অন্তত সাড়ে ৩৪ হাজার মানুষ ওই টেলিমেডিসিন চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ নিয়েছেন।
মাত্র ১২ দিনে এত সংখ্যক মানুষ পরিষেবা নেওয়ায় প্রকল্পের সার্থকতা নিয়ে আশার আলো দেখছে স্বাস্থ্য শিবিরও। ওই ১২ দিনে মোট রোগীর ৭০ শতাংশই মহিলা। পরিষেবা প্রাপকের তালিকায় পুরুষ ২৯.৯ এবং ০.১ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ রয়েছেন। প্রথম স্থানে রয়েছে হুগলি। প্রথমের দিকে রয়েছে উত্তরবঙ্গের চারটি জেলা— উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, কালিম্পং, মালদহ।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, করোনা আবহে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাপনায় বহু মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এবং সেই পর্যবেক্ষণ থেকেই নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ় যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, কিডনির অসুখ, পেটের সমস্যা-সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাতেও গ্রামের প্রান্তিক স্তরে টেলিমেডিসিন পরিষেবার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ১৮টি মেডিক্যাল কলেজের অন্তত ১২৬৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ২৩১৩টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওই পরিষেবা দিচ্ছেন। কোনও কেন্দ্র থেকে যাতে পরিষেবা দিতে কোনও সমস্যা না-হয়, তার জন্য আবার সেগুলিকে ৬৮টি মহকুমা স্তরে ভাগ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও পরিষেবা দেওয়ার সুবিধার জন্য ছ’টি আঞ্চলিক কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পের ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনও ফাঁক না-থাকে, সেই জন্য অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে সেটির দেখভালের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিডিএইচএস (নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়) চিকিৎসক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়কে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “গ্রামের প্রান্তিক স্তরের মানুষকেও বিশেষজ্ঞদের চিকিৎসার আওতায় আনাটাই মূল লক্ষ্য। মনে রাখতে হবে, করোনার পাশাপাশি অন্য রোগও কিন্তু বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সেই সব রোগেরও যথোপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন। এই কয়েক দিনে এত মানুষের পরিষেবা নেওয়া থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সেটি কতটা জরুরি।” এক-একটি টেলিমেডিসিন পরামর্শে গড় সময় লাগছে চার মিনিট দু’সেকেন্ড। সব মিলিয়ে ১২ দিনে ১৩০০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলেছে ওই টেলিমেডিসিন পরিষেবা। অনলাইনেই মিলছে প্রেসক্রিপশনও।
টিকার লাইন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে, সম্প্রতি কালনা মহকুমা হাসপাতালে করোনা টিকার প্রথম ডোজ় দেওয়া শুরু হয়। সোমবার গভীর রাতে টোকেন সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লাইন দেন বহু মানুষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টোকেন দেওয়া হয়।