প্রতীকী ছবি।
রাতে কাকার বাড়ি যাওয়ার নাম করে বার হয়ে যায় মেয়েটি। বাড়িতে রেখে যায় মোবাইল ফোন। অনেক রাতেও সে ফিরছে না দেখে কাকার বাড়িতে ফোন করা হয়। তখনই জানা যায়, সেখানে যায়নি সে। তার পরে শুরু হয় খোঁজ। শেষে রাত দু’টো নাগাদ দশম শ্রেণির সেই ছাত্রী, পনেরো বছরের মেয়েটির দেহ মেলে তাদেরই বাড়ির কুয়োর মধ্যে থেকে। ফালাকাটা হাইস্কুলের এই মেধাবী ছাত্রীর গলায় একটি ওড়না জড়ানো ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। তবে পরিবার এবং পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। মঙ্গলবারের এই ঘটনার সঙ্গে প্রেমজনিত কোনও কারণ যুক্ত নেই বলেই দাবি নাবালিকার পরিবারের।
ফালাকাটার কাছে কুঞ্জনগরে মেয়েটির বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দা নারায়ণ রায় ডাকুয়া জানিয়েছেন, মৃত ওই ছাত্রীর ব্যবহারে কিছু দিন ধরেই অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রীর এক বন্ধুর অভিভাবক জানান, স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে আত্মহত্যা নিয়ে গল্প করত মেয়েটি। পুলিশের অনুমান, লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় লেখাপড়ায় ফাঁক পড়ে গিয়েছিল। স্কুল খোলার পরে প্রতিটি বিষয়ের উপরে ‘প্রজেক্ট’ জমা দেওয়া তো বটেই, সঙ্গে ছিল আসন্ন টেস্টের চাপ। তার উপরে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়েও ছাত্রীটি হিমশিম খাচ্ছিল বলে ধারণা পুলিশের। পড়াশোনার চাপ নিতে পারছে না বলে এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা না দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয় মেয়েটি। ফালাকাটা থানার আইসি সনাতন সিংহ বলেছেন, ‘‘এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে। মেয়েটির গলায় কোনও দাগ পাওয়া যায়নি। গলায় ওড়না থাকলেও, মেয়েরা যে ভাবে ওড়না পরে, সেই ভাবেই সেটি পরা ছিল।
কিশোরীর কাকার আক্ষেপ, ‘‘ওর মনে পরীক্ষা নিয়ে ভয় থাকলে আমাদের জানাতে পারত। আমাদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’ এই ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন বাকি অভিভাবকরাও। মেয়ের মৃত্যুতে শোকে বারবার অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন নাবালিকার বাবা ও মা।