Teachers Day

মায়েরা শিখছেন, দিচ্ছেন জীবনের পাঠ

করোনার সময় থেকে বদলে গিয়েছে বীরভূমের শর্মিলা হেমব্রম, আলেয়া খাতুনদের জীবন। পুঁথিগত শিক্ষার বাইরেও যে অনেক কিছু শেখার-জানার আছে, গ্রামের শিশুদের তারই পাঠ দিচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৪৩
Share:

শিশু কোলে মা শিক্ষিকা। সোমবার শিক্ষক দিবসে সিউড়ির নগরী গ্রামে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

হেঁশেল ঠেলে আর সংসার সামলেই ওঁদের দিন কেটে যেত। কোনও দিন সেই মায়েরা ভাবেননি যে সবার শিক্ষক হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু করোনার সময় থেকে বদলে গিয়েছে বীরভূমের শর্মিলা হেমব্রম, আলেয়া খাতুনদের জীবন। পুঁথিগত শিক্ষার বাইরেও যে অনেক কিছু শেখার-জানার আছে, গ্রামের শিশুদের তারই পাঠ দিচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

সোমবার শিক্ষক দিবসের দিনে, সেই মা-শিক্ষিকাদের হাতে গোলাপ আর পেন তুলে দিল কচিকাঁচারা। ছোট্ট ছেলেকে কোলে নিয়ে সিউড়ির তালডিহি গ্রামের কবিতা মুর্মু বললেন, “বাচ্চাগুলিকে কবিতা পড়িয়ে, আঁকা শিখিয়ে বড্ড আনন্দ হয়।” তাঁর মতোই আরও অনেক মা-শিক্ষিকাই এসেছিলেন কোলের বাচ্চাকে নিয়ে। সাম্প্রতিক কালে বীরভূম জেলার নাম উঠলেই গরু, কয়লা পাচার-সহ বিভিন্ন অন্ধকার দিক সামনে আসে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ওই মায়েদের আনন্দ অন্য অনুভূতি তৈরি করে বলে জানাচ্ছিলেন সিউড়ির বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে এমন শিক্ষাঙ্গনের নির্মাতা সংস্থা লিভার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী। তাঁর কথায়, “সাম্প্রতিক কালে যখন কিছু মানুষের বাড়ি থেকে টাকা বেরিয়ে আসছে, তখনই অন্য ছবি দেখাচ্ছেন বীরভূমের প্রান্তিক অঞ্চলের মায়েরা।”

‘প্রথম’ নামের একটি শিক্ষা সংস্থার সহযোগিতায় গত বছর সিউড়ির তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত— নগরী, খটঙ্গা, আলুন্দাতে চালু হয়েছিল ‘পড়া-লেখা’ প্রকল্প। লক্ষ্য ছিল, কোভিডে স্কুল বন্ধ থাকলেও গ্রামের শিশুরা যেন প্রকৃতি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়। প্রকল্পটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় চিকিৎসক শৈবাল মজুমদার জানান, খোলা আকাশের নীচে বা মন্দির, মসজিদের চাতালে বসে শিশুদের প্রকৃতি শিক্ষা দিচ্ছেন যাঁরা, তাঁরা সকলেই যে উচ্চশিক্ষিত তা একেবারেই নয়। কিন্তু এক জন মা পারেন সন্তানকে প্রকৃত শিক্ষা দিতে। তাই সেই মা সন্তানের পাশাপাশি গ্রামের আরও শিশুদের শেখাবেন-পড়াবেন। শৈবালের কথায়, “যে সব মায়েরা একেবারে পড়াশোনা জানেন না, তাঁদেরও এই প্রকল্পে আনা হচ্ছে। যাতে শিখতে ও শেখাতে পারেন।”

Advertisement

কী শেখে শিশুরা? আলন্দা গ্রামের রুবিনা খাতুনের কথায়, “ওদের খেলতে ইচ্ছা করলে, আমরা খেলা করি। অভিনয়ের মাধ্যমে কবিতা পড়াই। গল্পের মাধ্যমে অক্ষর চেনাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement