আমন্ত্রণ জানিয়েও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিশেষজ্ঞ কমিটি থেকে রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞ অমিত্রসূদন ভট্টাচার্যকে বাদ দেওয়ায় শিক্ষামহল হতবাক। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের এই আচরণের নিন্দায় মুখর হয়েছেন রাজ্যের সর্বস্তরের শিক্ষাবিদেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চারটি শিক্ষক-পদে নিয়োগের জন্য বৃহস্পতি-শুক্রবার ইন্টারভিউ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকার শুরুর ঠিক আগে উপাচার্যের ঘরে ডেকে পাঠিয়ে অমিত্রসূদনবাবুকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁকে শেষ পর্ষন্ত ইন্টারভিউ বোর্ডে রাখা হয়নি। স্তম্ভিত হয়ে যান ওই বিশেষজ্ঞ। পরে বলেন, ‘‘আমি আহত, অপমানিত। পরবর্তী প্রজন্ম এঁদের থেকে কী শিখবে, জানি না।’’
প্রবীণ এই শিক্ষাবিদকে যে-ভাবে ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার মুখে চলে যেতে বলা হয়েছে, সেটা আদৌ শোভন নয় বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদেরা। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়ের মতে, অমিত্রসূদনবাবুকে যে-ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই অভব্য আচরণে আমি মর্মাহত। তাঁদের এই আচরণের নিন্দা করছি,’’ শুক্রবার বলেন অমলবাবু। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায় বিষয়টি জেনেছেন খবরের কাগজ পড়ে। ‘‘অমিত্রসূদনবাবুর প্রতি সৌজন্যের খুব অভাব ছিল বলেই মনে হয়েছে,’’ বললেন বিশ্বজিৎবাবু।
বাদ পড়ার দিনেই অমিত্রসূদনবাবু জানিয়েছিলেন, কর্তৃপক্ষ সম্ভবত এমন প্রার্থীদের নিতে চান, যাঁদের তিনি হয়তো আদৌ যোগ্য বলে মনে করতেন না। তাই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এখানে আমাকে দিয়ে ওঁদের স্বার্থসিদ্ধি হতো না,’’ এ দিন সরাসরি বলে দিয়েছেন অমিত্রসূদনবাবু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের গুঞ্জন, ওই সব পদের জন্য কয়েক জন প্রার্থীর নাম আগে থেকেই নির্দিষ্ট হয়ে আছে। এই বিষয়ে যিনি সব থেকে বেশি প্রভাব খাটিয়েছেন বলে অভিযোগ, তিনি বাংলারই প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি সাধারণ অধ্যাপক। এত ক্ষমতা আমার নেই। আমি ছুটিতে আছি। অমিত্রসূদনবাবুর বাদ পড়ার কথা জানলাম খবরের কাগজ পড়ে। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক।’’