পুজোর ছুটির মধ্যেও ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
খাতায়-কলমে পুজোর ছুটি চলছে। তবে লক্ষ্মীপুজোর পরদিন থেকেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পড়ুয়ারা বইখাতা নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে স্কুলে। আসছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। জোরকদমে চলছে ক্লাস।
উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের চৌবেড়িয়া দীনবন্ধু বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগে খুশি অভিভাবকেরা। কিন্তু পুজোর ছুটির আরাম উপভোগ না করে কেন এই সিদ্ধান্ত?
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালেন, এখানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শুধু ছেলেরা পড়াশোনা করে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি দু’টিতে কো-এডুকেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে ৪৮ জন, উচ্চ মাধ্যমিকের বসবে ১২১ জন। দুর্গাপুজোর আগে নেওয়া পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কিছু পড়ুয়া খুবই খারাপ ফল করেছে। অনেকে উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
স্কুল থেকে অভিভাবকদের ডেকে এনে পরীক্ষার খাতা দেখানো হয়। প্রধান শিক্ষক তীর্থজিৎ মুখোপাধ্যায় প্রস্তাব দেন, পুজোর ছুটিতেও ক্লাস করুক ছেলেমেয়েরা। অভিভাবকেরা রাজি হয়ে যান। সেই মতো লক্ষ্মীপুজোর পরদিন থেকে শুরু হয়েছে ক্লাস।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অকৃতকার্য হওয়া পড়ুয়াদের পাশাপাশি যারা উত্তীর্ণ, তারাও নিয়মিত ক্লাসে আসছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ঠিকমতো গাইড করা জরুরি। তা ছাড়া, অতিরিক্ত ক্লাস না করালে সিলেবাস শেষ করা যাবে না।’’
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সোম থেকে শনিবার ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। রোজ দু’টি করে বিষয় পড়ানো হয়। ক্লাস চলছে দেড় ঘণ্টা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে সোম থেকে শুক্রবার। পুজোর ছুটির ক্লাসেও হাজিরা ভাল বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক-সহ ১২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাও নিয়মিত আসছেন। ২১ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট। তার আগে সকলকে তৈরি করাই লক্ষ্য তাঁদের। শিক্ষকেরা জানালেন, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। গৃহশিক্ষক নেই। তারা পড়াশোনার জন্য পুরোপুরি স্কুলের উপরেই নির্ভরশীল।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজা মাহাতো, মনোজ মজুমদার, গৌরব ভট্টাচার্যেরা জানায়, পুজোর ছুটিতে বাড়িতে ঠিকমতো পড়াশোনা হয় না। স্যার-দিদিমণিরা স্কুলে পড়ানোয় খুবই উপকার হচ্ছে।